সংস্কৃতি যেখানে যেমন

জীয়ৗন সড়ক
ভাত ফুটছে গরম হচ্ছে
রক্ত গরম হচ্ছে না ফুটছে না
আমি কোনও কবি নই
কাজ করি নামাল আর পাথর ভাঙা
আমারই জমি আমারই মাটি
তবু কোন ভয়ে আমি চুপসে থাকি?

আমরা ক্রমে পিছিয়ে পড়ছি বাংলার বিস্তৃত গ্রাম্য জীবন থেকে। হারিয়ে ফেলছি মাটির গন্ধ, সন্ধ্যার প্রদীপ। সব। আসলে মেঠো, সহজ, কঠিন এমন সব ছবি আজকের দিনের ‘শহুরে’ ব্যস্ততায় ক্রমেই লুপ্ত হতে বসেছে। হারিয়ে যাওয়ার এই বিষন্নতার মাঝে আশা জাগাচ্ছেন লক্ষ্মণ হাঁসদারা। কবিতায়, গল্প কথায়।
গ্রাম-মফস্সল থেকে অজানা আদিবাসী জীবনের ছন্দ ঘাম ঝরানো এমন সব অনুভূতি নিজের কবিতায় অতি সূক্ষ্মতায় তুলে ধরেছেন লক্ষ্মণচন্দ্র হাঁসদা। লক্ষ্মণবাবু বীরভূমের একজন প্রশংসিত কবি। পেশায় সিউড়ির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। গত রবিবারই প্রকাশিত হল তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘জীয়ৗন সড়ক’ (জীবন সড়ক)। উপরের লাইনগুলি তারই একটির (‘ঝড়ের পূর্বরাত’)। যেখানে আদিবাসীদের নিজেরই জমিতে দিন মজুর হয়ে কাজ করার যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে নিপুণ ভাবে।
সিউড়ির সিধো-কানহু মঞ্চে অনুষ্ঠিত রবিবারের ওই বই প্রকাশে হাজির ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক গুগাউ টুডু। তাঁর হাতেই মুক্তি পায় ‘জীয়ৗন সড়ক’। প্রকাশক ষান্মাষিক দ্বিভাষিক (সাঁওতালি ও বাংলা) লিটল ম্যাগাজিন ‘জানম হাঁসা জন্মভূমি’। যাঁর সম্পাদক লক্ষ্মণবাবু নিজেই। মোট কবিতার সংখ্যা ৯৩। কিছু বাংলায়, কিছু সাঁওতালি ভাষায় (বাংলা হরফে)। কিছু কবিতা আবার দ্বিভাষিক সাঁওতালির পাশাপাশি বাংলায়। কাব্যগ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছেন প্রখ্যাত রবীন্দ্র গবেষক সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্মণবাবুর কবিতার ভূয়সী প্রশংসাই রয়েছে তাতে।

নাটক প্রতিযোগিতা
একটা সময় ছিল যখন জেলায় জেলায় চুটিয়ে একাঙ্ক নাটক মঞ্চস্থ হত। কিন্তু আজকের এই ডিজিটাল যুগে পেশাদার থিয়েটারের মতোই ‘চ্যালেঞ্জে’র মুখে পড়েছে সেই একাঙ্ক নাটকও। বীরভূমের প্রবীণ নাট্যকার বাবুন চক্রবর্তী বলেন, “সেই ষাটের দশকে মন্মথ রায়, কিরণ মৈত্র, পরে রাধারমণ ঘোষের একাঙ্ক নাটক দেখে আমরা অনুপ্রেরণা পেতাম। তা দেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম একাঙ্ক নাটকে। কিন্তু এখন সেই একাঙ্ক নাটক কোথায়?”
জেলায় সেই একাঙ্ক নাটককে জনপ্রিয় করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে ‘বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী’। প্রতিযোগিতা আয়োজন করে সংস্থা নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে চাইছে শিল্পের এই বিশেষ রূপে। তাই গত ২৭-২৯ নভেম্বর লাভপুরের ‘অতুল শিব মঞ্চে’ জেলার চারটি নাট্য দল যোগ দিল প্রতিযোগিতায়। যেখানে প্রথম হল সিউড়ির ইয়ং নাট্য সংস্থা।

নাট্য অভিনেতা
উত্তম চট্টোপাধ্যায়
অভিনয়ে যখন হাতে খড়ি হয়, বয়স মাত্র পাঁচ। জন্মভূমি ঝাড়খণ্ডের পলসা গ্রামে ‘রহিতাস্য’ নাটকে তার অভিনয় অবাক করেছিল অনেককেই। তখন বাবার হাত ধরে মঞ্চে উঠলেও সেই ছোট্ট শিশু উত্তম চট্টোপাধ্যায়ের পেশাদার নাট্য জগতের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল আরও পরে। ঝাড়খণ্ড থেকে সিউড়িতে চলে আসার পর যোগ দিয়েছিলেন‘আনন নাট্য সংস্থা’য়। সংস্থার তৎকালীন পরিচালক বিশিষ্ট অভিনেতা বাবন চক্রবর্তীর হাত ধরেই উত্তমবাবুর পেশাদার মঞ্চ অভিনয়ে প্রবেশ। বর্তমানে ইসিএল কর্মী উত্তম চট্টোপাধ্যায় বাবনবাবুরই ‘বীরভূমের আনন নাট্য সংস্থা’র সঙ্গে যুক্ত। মূলত কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হলেও উত্তমবাবু সমান দক্ষ সিরিয়াস চরিত্রের অভিনয়েও। অভিনয় ছাড়াও গত দশ বছর ধরে উত্তমবাবু মেতেছেন লোকগানের চর্চায়। সেই আগ্রহেই বাউলের আখড়ায় রাত কাটানো তাঁর প্রিয় নেশা। তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়।

ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.