এক জনকে নিয়ে মুম্বইয়ের উড়ান তখন মাটি ছুঁয়েছে। অন্য জন ইডেনে প্র্যাক্টিস শেষ করে মাঠ ছাড়ার তোড়জোর করছেন।
এক জন এসেছেন নিজের শ্রেষ্ঠত্বের অগ্নিপরীক্ষা দিতে। অন্য জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের শেষ প্রান্তে চলে গিয়েও ফিরে এসেছেন ফিনিক্স পাখির মতো।
সচিন তেন্ডুলকর এবং কেভিন পিটারসেন। আগামী সপ্তাহে ইডেনে ‘ক্ল্যাশ অব দ্য টাইটান্স’-এর আগে দুই মহাতারকা রবিবার ডুবে ছিলেন নিজের নিজের জগতে। |
সচিন-সহবাগ-যুবরাজরা এ দিন শহরে পা দিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নিজের নিজের অনুষ্ঠান নিয়ে। সচিন এই সিরিজে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন, কোনও অনুষ্ঠানেই যাচ্ছেন না। ব্যতিক্রম হয়েছে কলকাতায় এসে। চ্যারিটির জন্য তিনি এ দিনের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন যুবরাজ। এই শহরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ বার টেস্ট খেলে ক্যানসারকে হারানোর যুদ্ধে নেমে পড়েছিলেন যুবি। সেটা ছিল ২০১১-র নভেম্বর। তার বছরখানেক পরে ফের শহরে পা যুবরাজের। ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী যুবরাজের কথায় আরও এক বার উঠে এল সচিনের প্রতি তাঁর ভক্তি। যুবি বললেন, “যখন ছোট ছিলাম, তখন সচিনই ছিল আমার আদর্শ। আর এখন ওর সঙ্গে এক ড্রেসিংরুম শেয়ার করতে পারাটা অসাধারণ ব্যাপার। সত্যি বলতে কী, সচিন নিয়ে বলতে শুরু করলে কয়েকটা দিন কেটে যাবে!”
অন্য দিকে পিটারসেন প্র্যাক্টিস শেষে হোটেলে ফিরে একের পর এক টুইট করে গিয়েছেন। কখনও ফ্লিনটফের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘এ বার থেকে তোমার সঙ্গে খুব সাবধানে কথা বলতে হবে। ওই বাঁ হাতের জ্যাবটা আমার চোয়ালে পড়ুক চাই না।’ কখনও সুইমিং পুলের ধারে নিজের ছবি টুইট করে বলছেন, ‘উফ কী ঠান্ডা। কী করে সুইমিং পুলে নামব।’
সচিন আবার এ দিন চিত্র সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের বই ‘দ্য পিক’-এর উদ্বোধনে এসে বলে যান, “আমার বাবা সব সময় বলতেন, এই জীবনে মাত্র একটা জিনিস ছাড়া বাকি কিছুই স্থায়ী নয়। সেটা হল তোমার পরিচয়। লোকের সঙ্গে তুমি কী রকম ব্যবহার করছ।” |
এই অনুষ্ঠান চলার কাছাকাছি সময় বীরেন্দ্র সহবাগ আবার নতুন এক বিতর্ক উস্কে দিয়ে গেলেন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ বোরিয়া মজুমদারের নতুন রান্নার বই নিয়ে এক অনুষ্ঠানে সহবাগের ছোটখাটো বিস্ফোরণ, “ইডেনে কখনও ভাল খাবার পাইনি। বারবার বলেও খাবারের মানে কোনও উন্নতি হয়নি।” বলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বীরুকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ঠাট্টা করছেন না তো? তাঁর সাফ উত্তর, “ঠাট্টা কেন করব? এখানে ম্যাচের সময় যে স্যান্ডউইচ দেওয়া হয় আমাদের, তা মোটেই ভাল নয়। এই নিয়ে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি।”
ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে ঝড় যখন মোটামুটি শান্ত, তখন সহবাগের এই অপ্রত্যাশিত বোমা ফের নতুন বিতর্ক তৈরি করল। সিএবি অবশ্য মনে করছে, ঠাট্টার মেজাজেই সহবাগ এ কথা বলেছেন। সিএবি-র কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে এ দিন বলছিলেন, “সহবাগ নিশ্চয়ই মজা করেছে। এত বছরে এ রকম অভিযোগ তো কেউ করেনি। পাকিস্তান এসে খেলে গিয়েছে। ওরাও কখনও অভিযোগের আঙুল তোলেনি। সহবাগ যা খেতে চায়, আমরা খাইয়ে দেব।”
সচিন-পিটারসেন-সহবাগ-যুবরাজ। গোটা দিন জুড়ে ভিন্ন ভিন্ন মেজাজে পাওয়া গেল তারকাদের। তবে শহর এখন একটা জিনিসই চায় সচিনদের কাছ থেকে। বাইশ গজে তাণ্ডব। |