সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট বা এসআরএফটিআই-এর কর্তৃপক্ষ র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত আট পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করেছেন এবং হস্টেল ছাড়তে বলেছেন আগেই। কিন্তু শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তেরা ওই প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসেই ছিলেন বলে অভিযোগ। সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, শনিবার রাতে ছাত্রাবাসের বারান্দায় একটি পার্টিরও আয়োজন করেছিলেন অভিযুক্তেরা। ২৯ নভেম্বর অভিযুক্তদের ছাত্রাবাস ছেড়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না-মেনে অভিযুক্ত আট পড়ুয়া তার পরেও দু’দিন ছাত্রাবাসে ছিলেন।
র্যাগিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও ইনস্টিটিউট-কর্তৃপক্ষ কড়া ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ তুলেছে ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাহুল রায় জানান, তাঁরা এই নিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারিকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তাঁদের আর্জি, অভিযুক্তদের বহিষ্কার করা এবং ইনস্টিটিউটের ডিন ও অধিকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হস্তক্ষেপ করুন।
শনিবার রাত পর্যন্ত ওই পড়ুয়ারা যে ছাত্রাবাস ছেড়ে যাননি, রবিবার তা স্বীকার করেন প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রার দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়। তবে শনিবারের পার্টিতে অভিযুক্তদের থাকার কথা মানতে চাননি তিনি। রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে অভিযুক্তেরা সকলেই নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। দীপঙ্করবাবুর বক্তব্য, অভিযুক্তেরা সকলেই ভিন্ প্রদেশের বাসিন্দা। ক্যাম্পাসের বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ নমনীয় হয়ে তাঁদের কিছুটা সময় দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, শনিবার অভিযুক্ত ছাত্রদের স্পষ্ট ভাবে বলে দেওয়া হয়, ক্যাম্পাস না-ছাড়লে কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও অভিযুক্তেরা কী করে এসআরএফটিআই-কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি কথা বলার সুযোগ পেলেন, সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।
এসআরএফটিআই-এর শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশ অভিযোগ তুলেছিলেন, ২৯ নভেম্বর ছাত্রাবাস থেকে চলে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সত্ত্বেও শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তেরা হস্টেল ছাড়েননি। উল্টে তাঁরা অভিযোগকারীদের বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে, র্যাগিংয়ের অভিযোগ এলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে হবে। কিন্তু ইনস্টিটিউট-কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাননি। কেন? রেজিস্ট্রার বলেন, “পরিস্থিতি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই এখনও পুলিশে অভিযোগ করা হয়নি। অভিযুক্তেরা ছাত্রাবাস না-ছাড়লে এফআইআর করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।” |