পাশে পর্ষদ, কারখানা গড়লেন ছোট চাষিরা
তদিন পাতা উৎপাদন করে ফড়েদের ভরসায় বসে থেকে দিন কেটেছে। লোকসান হচ্ছে দেখেও বটলিফ ফ্যক্টরি কর্তৃপক্ষ যে দাম দিয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হয়েছেন। এক সময় দাম না পেয়ে রাস্তায় কাঁচা পাতা ফেলে প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি। নিরুপায় ক্ষুদ্র চা চাষিরা চা পর্ষদের দ্বারস্থ হন। এর পরে পর্ষদের পরামর্শে এক জোট হয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে নিজেরাই চা তৈরি করে বাজারজাত করার জন্য একটি কারখানা গড়ে নজির সৃষ্টি করলেন। ময়নাগুড়ির রামসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের পানবাড়ি গ্রামে তৈরি ওই কারখানায় ইতিমধ্যে পরীক্ষামূক উৎপাদন শুরু হয়েছে। আগামী ৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। ক্ষুদ্র চা চাষিদের ওই সাফল্যকে দেশের সামনে মডেল হিসেবে তুলে ধরতে উদ্যোগী হয়েছে চা পর্ষদ। চাষিদের লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে একই ভাবে আরও দুটি কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় চা পর্ষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ইনচার্জ জি বোরাইয়া বলেন, “পানবাড়ির ক্ষুদ্র চা চাষিদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে তৈরি চা কারখানা একটি মডেল।
ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।
এটা দেশে চা চাষিদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে তৈরি প্রথম চা কারখানা। আমরা ওই কারখানার মডেল সামনে রেখে আরও দুটি কারখানা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি।” কারখানা তৈরির স্বপ্ন প্রথম চাষিদের মনে উঁকি দেয় ২০০৪ সালে। তখন রামসাই গ্রাম পঞ্চায়েতের পানবাড়ি, রামসাই, সাতভেন্ডি, ঝারবড়গিলা, পূর্ববড়গিলা, কালামাটি, কাজলদিঘি, চ্যাংমারি এলাকার ক্ষুদ্র চা চাষিরা বিচ্ছিন্ন ভাবে যে যার মতো পাতা উৎপাদন করে ফড়েদের কাছে বিক্রি করতেন। ওই বছর কাঁচা পাতার দাম নেমে ১ টাকা কেজিতে দাঁড়ালে তাঁরা বিপাকে পড়ে যান। আন্দোলনে নামেন। কিন্তু লাভ হয়নি। এর পরেই যোগাযোগ শুরু হয় চা পর্ষদের কর্তাদের সঙ্গে। তাঁদের পরামর্শ মতো ২০০৪ সালে গড়ে তোলা হয় ‘পানবাড়ি স্মল টি গ্রোয়ার্স সোসাইটি’ নামে স্বনির্ভর গোষ্ঠী। শুরুতে সদস্য ছিলেন ৭১ জন। তাঁদের উৎপাদিত পাতার বাৎসরিক পরিমান ছিল প্রায় ৬ লক্ষ কেজি। ২০১১ সালে সদস্য সংখ্যা বেড়ে হয় ২৭৩ জন। উৎপাদিত পাতার পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ১৩ লক্ষ কেজি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানান, কারখানা তৈরির জন্য ২০০৮ সাল থেকে প্রতি কেজি চা পাতা বিক্রি থেকে সদস্যদের ১ টাকা সংস্থার তহবিলে জমা করা বাধ্যতামূলক করা হয়। ২০১০ সালের মধ্যে তহবিলে জমা হয় ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। এর পরেই প্রস্তুতি শুরু হয়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভাপতি বাদল দেবনাথ বলেন, “কারখানা তৈরির জন্য খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। এর মধ্যে আমরা নিজেরা তহবিল থেকে দিয়েছি ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। চা পর্ষদ দিয়েছে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও ব্যাঙ্ক থেকে ১ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।” সংস্থার কর্তারা জানান, কারখানায় তৈরি চা নিজস্ব ব্র্যন্ড নামে বাজারে ছাড়া হবে। বছরে ৬ লক্ষ কেজি চা উৎপাদন হবে সেখানে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “এখন চাষিরা নিজেদের খেতের পাতা থেকে উন্নত মানের সিটিসি চা বানাতে পারবেন। রফতানির সুযোগও বাড়বে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.