বিরোধী নেত্রী হিসাবে রাজারহাটে জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ সরলা মহেশ্বরীর বিরুদ্ধে এক সময় সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা সেই সিপিএম নেত্রীর সঙ্গে কেন দেখা করলেন, এ বার তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে আজ দেখা করেন প্রদীপবাবু। পরে তিনি জানান, তৃণমূল-শাসিত সরকারের দুর্নীতি, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, তোলাবাজির বিরুদ্ধে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে তেড়েফুঁড়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছেন সনিয়া। এই সূত্রেই মমতা-সরলা বৈঠকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, “এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মুখে নীতির কথা বলছেন। আর অন্য দিকে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছেন! সরলা মহেশ্বরীর বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারির মামলা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে ‘চক্রান্ত’ চলছে বলেও শোনা যাচ্ছে!” এই ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেসের দাবি তিনটি। সরলা কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন, কী কথা হয়েছে, এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে কি না, তা জানাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।
প্রসঙ্গত, রাজারহাটে জমি কেলেঙ্কারিতে এর আগে বহু বার নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন ওই সিপিএম সাংসদের পারিবারিক সংস্থার। মমতা বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন অশ্লীল ছবিতে তাঁর মুখ বসিয়ে যে সিডি প্রচার করা হয়েছিল, তা নিয়েও সরলার জামাই অমিতাভ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। প্রদীপবাবু-অমিতাভ চক্রবর্তীর মতো কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ শুভাপ্রসন্ন মমতা-সরলা বৈঠকের মধ্যস্থতা করাতেই ‘আঁতাঁতের আঁশটে গন্ধ’ পাওয়া যাচ্ছে! সরলার অবশ্য দাবি, চক্রান্ত করেই তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁর স্বামী ও জামাইকেও ফাঁসানো হয়েছে। আর শুভাপ্রসন্নের বক্তব্য, তাঁকে অযথা বিতর্কে জড়ানো হচ্ছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আজ আরও বলেন, “তোলাবাজি নিয়ে এখন তৃণমূলের নেতারাই দলের একাংশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব। সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য যে ভাবে তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, তাতেই শাসক দলের প্রকৃত চরিত্র মানুষের সামনে উঠে আসছে। রবীন্দ্রনাথবাবু ভাল মানুষ। সৎ সাহসের জন্য তাঁকে সত্যিই বাহবা দিতে হয়!” প্রদীপবাবু জানান, সনিয়ার নির্দেশে রাজ্যে কংগ্রেস আরও তীব্র আন্দোলনে নামতে চলছে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে জেলায় জেলায় যুব কংগ্রেসের নেতারা আইন অমান্য আন্দোলন করবেন। তৃণমূল যে ভাবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিয়ে রাজ্যের সর্বনাশ করছে, তার বিরুদ্ধে সরব হবেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। |