ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের পরিচয়পত্র থাকলে ঋণ পাওয়া-সহ নানা সুবিধা পান হস্তশিল্পীরা। কালনা মহকুমায় এমন যত শিল্পী রয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই এই পরিচয়পত্র নেই জানিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকদের শীঘ্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বললেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, বস্ত্র ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। মঙ্গলবার বিকেলে পূর্বস্থলী ১ ব্লক অফিসে একটি বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই বৈঠকে ছিলেন মহকুমাশাসক, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা ও ব্লক শিল্পোন্নয়ন আধিকারিক প্রমুখ। স্বপনবাবু কোন ব্লকে কত হস্তশিল্পীকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে জানতে চান। আধিকারিকেরা জানান, মন্তেশ্বরে ১৫১১, কালনা ১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে ১২২২ ও ৭৮২, পূর্বস্থলী ১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে ৪১৭ ও ১০৬৭ জনকে ওই পরিচয়পত্র দেওয়া হয়ছে। এই তালিকা দেখে মন্ত্রী জানান, কালনা মহকুমায় মৃৎ, মাদুর, কুলো, ঝুড়ি তৈরি-সহ নানা শিল্পের সঙ্গে বহু মানুষ জড়িত রয়েছেন। সেই তুলনায় অনেক কম পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে ছোট ছোট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের কর্মসংস্থানের দিকে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন জানিয়ে স্বপনবাবু পরিচয়পত্রের ব্যাপারে সপ্তাহখানেকের মধ্যে জেলা স্তরের একটি রিপোর্ট তাঁকে জমা দিতে বলেন আধিকারিকদের। পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও অনেক ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে চাইছে না বলে বৈঠকে অভিযোগ ওঠে। স্বপনবাবু আধিকারিকদের যে সমস্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠছে তার তালিকা তৈরি করতে বলেন। তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বৈঠকে মন্ত্রী মহকুমা হস্তচালিত তাঁত উন্নয়ন আধিকারিক কৌশিক হালদারের কাছে জানতে চান, মাস পাঁচেক আগে বহু তাঁত সমবায় সমিতিকে ধুতি, লুঙ্গি, চাদর, শাড়ি বুনতে দেওয়া হয়েছিল, তা এখনও জমা পড়ল না কেন। কৌশিকবাবু জানান, বর্ষার জন্য দেরি হয়েছে। মন্ত্রী অবশ্য এই জবাবে সন্তুষ্ট হননি। বৈঠকে মন্ত্রী জানান, তাঁত সমবায়গুলি বিক্রি হওয়া পণ্যের উপরে ১০ শতাংশ হারে ‘ইনসেনটিভ’ পায়। নথি থেকে দেখা গিয়েছে, কেউ কেউ ২২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘ইনসেনটিভ’ পেয়েছে। অর্থাৎ, তারা ২২ কোটি টাকার পণ্য তৈরি করেছে। মন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, “সত্যিই যদি এত পণ্য তৈরি হয়ে থাকে তবে মহকুমার সাধারণ তাঁতিদের এই দুরবস্থা কেন?” এ সংক্রান্ত কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে সে ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। বৈঠক শেষে জেলা শিল্পোন্নয়ন আধিকারিক দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “মন্ত্রী বেশ কিছু তথ্য চেয়েছেন। শীঘ্রই সেগুলি তাঁকে দেওয়া হবে।” |