মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত না করে মৃতদেহ কলকাতায় পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাসপাতালে ভাঙচুর চালালেন মৃতের পরিবারের লোকজন। ভারপ্রাপ্ত সুপার-সহ কয়েকজন চিকিৎসককে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সোমবার ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতের ভাই ও এক প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সুপার শুভাশিস মণ্ডল বলেন, “সমস্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারী বলেন, “কী পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটল তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডায়মন্ড হারবারের পূর্ব ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহেরুনা শেখকে (৫২) রক্তচাপ জনিত অসুখের কারণে গত শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। রবিবার বিকেলে এসে তাঁরা দেখেন হাসপাতালে রোগী নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। সোমবার সকালে স্থানীয় জোবরালি গ্রামের কাছে খালে মৃতদেহ ভাসতে দেখেন বাসিন্দারা। |
ছড়িয়ে আছে টেবিল-চেয়ার। —নিজস্ব চিত্র। |
খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। এর পরে মেহেরুন শেখের ভাই ওবাইদুল্লা গিয়ে দিদির দেহ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ২টো নাগাদ চিকিৎসক জীবন ভট্টাচার্য ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে দেখেন দেহে পচন ধরেছে। এরপরেই তিনি দেহটি কলকাতায় মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা নেন। এখানে ময়নাতদন্ত হবে না জেনে মেহেরুনের পরিবারের লোকজন চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। কয়েকজন গিয়ে ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। খবর পেয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার ও কয়েকজন চিকিৎসক সেখানে গেলে তাঁদের উপরে চড়াও হয় তারা। যদিও মৃতের প্রতিবেশী এমাদুল্লা শেখ, খইরুল সেখের অভিযোগ, “এখানে কেন ময়নাতদন্ত হবে না তা সুপারের কাছে জানতে চাইলে আমাদের সঙ্গে দুব্যর্বহার করা হয়। এমনকী রোগী কী ভাবে হাসপাতালে বাইরে গেল সে বিষয়েও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তাঁরা। ওঁদের এমন ব্যবহারে ক্ষিপ্ত হয়ে জনতা ভাঙচুর চালায়।” |