জমি না-মেলায় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের প্রস্তাবিত নতুন দুটি থানার তৈরির প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। চলতি বছরের অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনারেটের উদ্বোধনের পর প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে নতুন দুটি থানা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি ফুলবাড়িতে। অন্যটি বাগডোগরা বিমানবন্দর এলাকায়। দুই মাস আগে সরকারি নিয়ম মেনে জমির জন্য শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (এসজেডিএ) চিঠি দেন শহরের পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার। কিন্তু কোন জমি কীভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পুরো প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, “কমিশনারেটের দুই প্রান্তে ওই দুটি নতুন থানা তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা জমি চেয়েছি। এসজেডিএ-কে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।” আশাবাদী এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “এটা তো কোনও বাণিজ্যিক বিষয় নয়। মানুষের সুযোগ সুবিধা দেখতেই থানা তৈরি হয়। আমাদের অফিসারেরা দেখছেন, দ্রুত পুলিশকে জমির অবশ্যই ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।” সরকারি সূত্রের খবর, একটি নতুন থানা তৈরি করতে খুব কম করে দেড় একর জমির প্রয়োজন হয়। সেখানে স্বয়ংসম্পূর্ণ থানার ভবন, হাজত, মালখানা, উদ্ধার করা গাড়ি রাখার জায়গা ছাড়াও অফিসার ও কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন হয়। আর্থিক অনুদান মিলতেই পূর্ত দফতরের তরফে ওই ভবনগুলি সাধারণ মাস ছয়েকের মধ্যে তৈরি করা দেওয়া হয়। কিন্তু জমি হস্তান্তর না হলে পূর্ত দফতর বা অন্য কোনও সরকারি কাজ শুরু করতে পারে না। এই ক্ষেত্রে ফুলবাড়ি এলাকায় ৩১-ডি জাতীয় সড়ক এবং বাগডোগরা বিমানবন্দর এলাকায় পুলিশের তরফে জমি চাওয়া হয়। প্রথমে এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়া (এআইআই) কাছে জমি চাওয়া হয়। কিন্তু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জমি না থাকায় তা দিতে পারবেন না বলে জানান। বিমানবন্দরের অধিকর্তা কল্যাণকিশোর ভৌমিক বলেন, “বিমানবন্দর থানা খুবই দরকার। কিন্তু আমাদেরই জমি প্রয়োজন। যা রয়েছে তা থেকে দেওয়া সম্ভব নয়।” এর পরেই কমিশনারেটের তরফে এসজেডিএ-র কাছে বিমানবন্দর লাগোয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে জমি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু দুটি এলাকায় জমি থাকলেও তার বাণিজ্যিক গুরুত্ব বা দাম বিচার করে প্রথমে চিন্তাভাবনা শুরু করেন এসজেডিএ-র আধিকারিকেরা। সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার বলেন, “জমি দুই জায়গাতেই রয়েছে। কিন্তু কী ভাবে, কী দামে তা দেওয়া হবে সেটা রাজ্য সরকার ঠিক হবে। বাণিজ্যিক দামেই স্বরাষ্ট্র দফতরকে তা দেওয়া হবে না কী নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হবে তা নির্দেশ এলে পরিষ্কার হবে।” বিমানবন্দরের জন্য নতুন থানা ছাড়াও ভক্তিনগরের উপর চাপ কমাতে ফুলবাড়িতে নতুন থানা তৈরির সিদ্ধান্ত য়েছে। ভক্তিনগর থেকে ফুলবাড়ি, আমবাড়ি এলাকা যথেষ্টই দূরে। |