ব্যয় কমাবে বায়ো গ্যাস
রান্নার গ্যাসের দামে হেঁসেল সামলাতে মাথায় হাত গৃহস্থের। আশার আলো দেখাচ্ছে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। মাস দুয়েক আগে কলেজের চারটি হস্টেলে বসেছে বায়ো গ্যাসের প্লান্ট। যাতে সব্জির খোসা থেকে শুরু করে, ফ্যান, ফেলে দেওয়া ডাল, রান্না করা তরকারি বা মাছের কাঁটার মতো হেঁসেল বর্জ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে রান্নার গ্যাস। তা থেকেই চলছে রান্নাবান্নার কাজ। প্রতি মাসে হস্টেল পিছু বেঁচে যাচ্ছে তিনটে সিলিন্ডারের খরচ। কলেজে এই প্রকল্পের সাফল্য দেখে পকেট বাঁচাতে নিজের বাড়িতে প্ল্যান্ট বসিয়েছেন কলেজের এক কর্মী। অধ্যক্ষ জ্যোর্তিময় ঝম্পটি বলছেন, “চিন বা ভিয়েতনামে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস উৎপাদন হয়। আমাদের কলেজের হস্টেলে প্রতিদিন রাশি-রাশি বর্জ্য ফেলে দেওয়া হত। চিন-ভিয়েতনামের উদাহরণ দেখে ওয়েবরেডার সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওঁরা সহায়তা করেছেন। যে কোনও বড় বাড়ি, হোটেল বা প্রতিষ্ঠান কম খরচে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে।” ওয়েবরেডার অধিকর্তা এবং ওয়েস্টবেঙ্গল গ্রিন এনার্জি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুশোভন ভট্টাচার্য বলেন, “জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যেটা করেছি, গ্রামের দিকে গোবর ব্যবহার করে একই পদ্ধতিতে গ্যাস তৈরি করা হয়। তবে শহরের দিকে গোবর পাওয়ার ক্ষেত্রে বা ব্যবহারে সমস্যা থাকায় খুব বেশি ব্যবহার নেই। আমরা হেঁসেল বর্জ্য যেখানে তরিতরকারির খোসা থেকে মাছের আঁশ, মাংসের হাড় সবই ব্যবহার করে গ্যাস তৈরি করা যায় সেই পদ্ধতিতে শহরে এই গ্যাস তৈরির প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে চাই।” ওয়েস্ট বেঙ্গল রিনিউবেল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির কারিগরি সহায়তায় জলপাইগুড়ি কলেজ কর্তৃপক্ষ গ্যাসের প্লান্ট বসিয়েছেন। কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে, এই গ্যাস তৈরির প্লান্ট বসানোর খরচ সামান্য তেমনই এর কারিগরি প্রযুক্তি খুবই সরল। কলেজের চারটে হস্টেলে প্লান্ট বসাতে খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকা। পঞ্চাশ হাজার টাকার ভর্তুকি মিলেছে। বাড়িতেও ব্যবহার করা যেতে পারে এ প্রযুক্তি। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, যৌথ পরিবারে অর্থাৎ পরিবারের সদস্য ৬ হলেই গ্যাস উৎপাদন করে ব্যবহার করা যাবে। খরচ হবে মাত্র ১৮-২০ হাজার টাকা। মিলবে ভর্তুকিও। কী ভাবে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে? কলেজের হস্টেলের রান্না ঘরের পেছনে গর্ত খুঁড়ে বসানো হয়েছে কংক্রিটের মুখ খোলা চৌবাচ্চা। এই চৌবাচ্চায় ফেলা হচ্ছে হেঁসেলের বর্জ্য। চৌবাচ্চা থেকে পাইপের মাধ্যমে বর্জ্যগুলি মাটির তলায় ঢুকে যাচ্ছে। মাটির আরও নীচে একটি সাত ফুট গভীর চৌবাচ্চা রয়েছে। সেখানে তৈরি হচ্ছে বায়ো গ্যাস। যেটি পাইপ লাইনের মাধ্যমে রান্নাঘরের গ্যাস ওভেনে পৌঁছে যাচ্ছে। কী ভাবে তৈরি হচ্ছে গ্যাস? কলেজ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সমস্ত বর্জ্য নীচের চৌবাচ্চায় পৌঁছে যাচ্ছে। সেখানে তৈরি হওয়া মেসোফিলিক জাতীয় ব্যাক্টেরিয়া পচা বর্জ্যের কণা ভেঙে তৈরি করছে মিথেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস। যার মধ্যে মিথেনের পরিমাণই বেশি। এই ৩ গ্যাস পরিমাণে বেশি হয়ে চৌবাচ্চার ওপরের দিকে জড়ো হয়ে থাকে। ওপরে পাইপের মুখে লাগানো নব খুললেই পাইপ দিয়ে গ্যাস পৌঁছবে রান্নাঘরের ওভেনে। পাঁচ-ছয় জনের পরিবারের হেঁসেল বর্জ্য দিয়ে প্রতিম আসে অন্তত ২টি এলপিজি গ্যাসের সম পরিমাণ বায়ো গ্যাস তৈরি করা যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.