স্ট্যাম্প পেপার অমিল, হাতাহাতি
স্ট্যাম্প পেপারের আকালের জেরে মানুষের ভোগান্তি এবং তার জেরে ক্ষোভ কোথায় পৌঁছেছে, সোমবার সেটাই দেখল হাওড়া। এ দিন সকালে স্ট্যাম্প পেপার কিনতে হাওড়া আদালত চত্বরে একটি দোকানের সামনে লাইন পড়েছিল। কাউন্টারে স্ট্যাম্প পেপার দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে দেখেই ক্রেতাদের একাংশ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। কে আগে সংগ্রহ করবেন, তা নিয়ে হাতাহাতিও বাধে। শেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
কেবল কলকাতা বা শহরতলি নয়, গোটা রাজ্যেই স্ট্যাম্প পেপার ক্রমশ নাগালের বাইরে যাচ্ছে। অভিযোগ, স্ট্যাম্প পেপার মিলছে প্রায় সর্বত্রই, তবে বেশি দামে। কালোবাজারিতে ১০ ও ২০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার বিকোচ্ছে ১০০ টাকায়।
১০ ও ২০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার মূলত লাগে এফিডেভিট, ঘোষণাপত্র ও চুক্তিপত্র তৈরির কাজে। তাই চাহিদাও বেশি। সম্প্রতি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্যাস কোম্পানিগুলি গ্রাহকদের থেকে ‘কেওয়াইসি’ চাওয়ায় চাহিদা তুঙ্গে। মৃত লোকের নামে যেহেতু কেওয়াইসি হয় না, তাই নাম পাল্টে পরিবারের অন্য সদস্যের নামে গ্যাসের রেজিস্ট্রেশন করাতে ১০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে এফিডেভিট করাতে হচ্ছে।
অথচ হাওড়া, আলিপুর, শিয়ালদহ-সহ বিভিন্ন আদালত চত্বরে ছয় থেকে দশ গুণ বেশি দামে মিলছে স্ট্যাম্প পেপার। লম্বা লাইন আদালত চত্বরে দোকানের সামনে। ন্যায্য দামের স্ট্যাম্প পেপার শেষ হচ্ছে নিমেষে। শুরু হচ্ছে দালালদের দাপট। যেমনটা ঘটেছে এ দিন হাওড়া আদালত চত্বরে।
অথচ, এ নিয়ে ওয়াকিবহাল নন বিচারমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, “সদ্য বিচারমন্ত্রী হয়েছি। কিছুই জানি না। স্ট্যাম্প পেপারের কালোবাজারি হওয়া উচিত নয়। খোঁজ নেব।”
তথ্যের অধিকার নিয়ে কাজ করেন সাবির আহমেদ। গত দু’সপ্তাহ আলিপুর আদালত চত্বরে ঘুরেও ১০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার পাননি। হাইকোর্টেও ১০ ও ২০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারের আকাল। অভিযোগ, কোর্ট চত্বরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভেন্ডারদের কাছে না মিললেও আশপাশের দালালদের বেশি টাকা দিলেই মিলছে। আইনজীবীদের একাংশের প্রশ্ন, স্ট্যাম্প পেপারের সরবরাহ কম হলে দালালদের কাছে আসছে কী করে? প্রশাসনই বা ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
হাওড়া ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসু সিংহচৌধুরীর অভিযোগ, কালোবাজারি সব থেকে বেশি হাওড়ায়। প্রশাসনকে জানিয়ে কাজ হয়নি। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের সঙ্গে আইনজীবীরাও তীব্র সমস্যায়। পরিস্থিতি এমন যে, আমরা ধর্মঘটে যাওয়ার চিন্তা করছি।”
আলিপুর আদালতের আইনজীবী সাফিনা আহমেদ বলেন, ‘‘গ্যাসের কেওয়াইসি-র জন্য অনেকে এফিডেভিট করতে এসে স্ট্যাম্প পেপার না পেয়ে বহু দিন ঘুরছেন।” একই অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্ট্যাম্প পেপারের আকাল নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই এই ব্যবসায় যুক্ত কিছু ব্যক্তি বেশি করে স্ট্যাম্প পেপার কিনে বাজারে কৃত্রিম আকাল তৈরি করছেন। এ বার তা মারাত্মক আকার নিয়েছে।” অভিযোগ মানতে নারাজ সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতারা। হাওড়া আদালত চত্বরের বিক্রেতা অরুণ সরকার বলেন, “ট্রেজারি সপ্তাহে দু’বার স্ট্যাম্প পেপার সরবরাহ করে। প্রয়োজনের থেকে অনেক কম সরবরাহ করায় খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে দোকান বন্ধ করতে হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.