গন্তব্য হলদিয়া, যুবদের পথে নামাচ্ছে সিপিএম
রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেড় বছরের জমানায় শিল্পের বেহাল দশা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে সিপিএম। শিল্পের দাবিতে সওয়াল করেই এ বার তাদের গন্তব্য হলদিয়া। এবিজি-বিতাড়নের জেরে যে হলদিয়াতেই রাজ্যের শিল্প পরিবেশ বেআব্রু হয়ে পড়েছে।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজ্যে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের দাবিতে আগামী জানুয়ারিতে কলকাতা থেকে হলদিয়া যুব-পদযাত্রায় নামবে সিপিএম। পায়ে হেঁটে টানা সাত দিন ধরে এই পদযাত্রার পথে বিভিন্ন জায়গায় শিল্পের পক্ষে সওয়াল করে সভাও হবে। পদযাত্রার শেষে হলদিয়ায় হবে বড় মাপের সমাবেশ। যেখানে বক্তা হিসেবে হাজির থাকতে পারেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের মতো নেতারা।
এই পদযাত্রাই হতে চলেছে মমতার জমানায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে শিল্পের দাবিতে সিপিএমের প্রথম বড় কর্মসূচি।
সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, ৬ জানুয়ারি কলকাতা থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে হলদিয়ায় ১৩ জানুয়ারি শেষ হবে বলে আপাতত আলোচনা হয়েছে। ওই দিনই মূল সমাবেশটি করার চিন্তা-ভাবনা চলছে। রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য নিরুপম সেনের কথায়, “শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের স্বার্থেই ফের আমাদের যুব দল রাস্তায় নামছে।” তার জন্য হলদিয়াই কেন? নিরুপমবাবুর যুক্তি, হলদিয়া থেকেই বাম জমানায় রাজ্যের শিল্পায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস এ রাজ্যের শিল্পায়নের ‘মুখ’ হয়ে উঠেছিল। আর এখন সেই হলদিয়া থেকেই শিল্প সংস্থা পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যাচ্ছে। তাই হলদিয়ার লক্ষ্যেই ফের পথ হাঁটা শুরু করার সিদ্ধান্ত।
পদযাত্রার মূল দায়িত্বে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক জামির মোল্লা বলছেন, “হলদিয়া আমাদের গর্ব। সেখানে শিল্প-নগরী গড়ে ওঠার সময় বড় ভূমিকা ছিল আমাদের যুবদের। এখন নতুন শিল্প তো আসছেই না। যে শিল্প ছিল, তা-ও চলে যাচ্ছে। নতুন কর্মসংস্থান নেই। বরং কর্ম সংকোচন হচ্ছে! এই অবস্থায় শিল্পের দাবিতে তাই যুবরাই পথে নামছে।” তবে পদযাত্রার দিনক্ষণ এবং হলদিয়ার সমাবেশের বক্তা-তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে রাজ্য যুব সম্পাদক জানাচ্ছেন। হলদিয়ার সিটু নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠেরও বক্তব্য, “হলদিয়া শিল্প-নগরীকে যে শ্মশানে পরিণত করার চেষ্টা চলছে, তার প্রতিবাদকে আমরা ধারাবাহিক প্রচারে রাখতে চাইছি।”
শিল্প মহলের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূল জমানায় হলদিয়ায় যে ভাবে ট্রেড ইউনিয়নের নামে কারখানায় কারখানায় তোলাবাজি চলছে, তাতে শিল্প সংস্থাগুলি আতঙ্কিত। একই কারখানায় তৃণমূল-সমর্থিত দু’চারটি করে ইউনিয়ন। অনেক নেতা। ফলে ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলে শান্তিতে কারখানা চালাতে গিয়েও নানা ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। আবার আলিমুদ্দিন সূত্রের মতে, হলদিয়ার মাধ্যমে বামফ্রন্টের শিল্পায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, পাশের নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরিবর্তনের পরে রাজ্যের মানুষ বুঝতে পারছেন, শিল্প ছাড়া এগোনোর পথ নেই। মমতার সরকারের নীতির জন্য যে পথ আপাতত রুদ্ধ। এই সময়ে হলদিয়াকে সামনে রেখে শিল্পায়নের পক্ষে পথে নেমে হারানো রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে চাইছে সিপিএম।
প্রধান বিরোধী দলের এই তৎপরতায় শিল্প মহলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া মিশ্র। তাদের একাংশের মতে, শিল্পের পক্ষে যে কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে সমর্থন করাই যায়। কারণ এর সঙ্গে রাজ্যের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের স্বার্থ জড়িত। আবার এই মুহূর্তে রাজ্যের শিল্পায়ন প্রক্রিয়া যে ভাবে থমকে রয়েছে, তাতে বেশি রাজনীতি হিতে বিপরীত ডেকে আনতে পারে বলে একাংশের আশঙ্কা।
এই সন্ধিক্ষণে নন্দীগ্রামের ভূত তাড়ানোর কাজ হলদিয়া থেকেই শুরু করতে চাইছে সিপিএম!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.