মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে দুই ইংরেজ কোচ
পায়ে ফুটবলের বদলে হাতে ক্রিকেট বল। পিচের উল্টো দিক থেকে একের পর এক কভার ড্রাইভ, স্কোয়ার ড্রাইভ, পুল, হুকের বন্যা!
ঘড়ির কাঁটায় দশটা পাঁচ। ধোনি-বাহিনীকে পদপিষ্ঠ করে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের জয়োল্লাসের খবরটা যখন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে এসে পৌঁছোল, তখন মর্গ্যানের অনুশীলনে ‘বোলার’ ওপারাকে দেখা গেল ‘ব্যাটসম্যান’ ইসফাককে বাউন্সার মারছেন। এবং কাশ্মীরি মিডিও খুব সাবলীল ভাবেই নাইজিরিয়ান স্টপারের গোলা-বারুদগুলো সামলালেন। ফুটবল মাঠে বিপক্ষের কড়া ট্যাকলগুলো সামলানোর মতোই।
ক্রিকেটের পিচে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ‘লিড’ ধরে রাখতে পারেননি সচিনরা। ফুটবলের মাঠে অবশ্য এক ব্রিটিশ কোচের হাত ধরেই এক ব্রিটিশ কোচের দলকে টপকাতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গল বনাম সালগাওকর মহাসংগ্রাম অন্তরালে আসলে ট্রেভর জেমস মর্গ্যান বনাম ডেভিড বুথের আক্রমণাত্মক মানসিকতার টক্করও বটে। মজার ব্যাপার হল, তিরিশ বছর আগে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ইংল্যান্ডের তৃতীয় ডিভিশন ক্লাব এএফসি বোর্নমাউথে যখন খেলছেন মর্গ্যান, তখন এক ম্যাচে বিপক্ষ দলের কোচ ছিলেন বুথ। সেই ম্যাচের সেন্টার ফরোয়ার্ড জেমসকে এখনও মনে আছে তাঁর। তবে ফুটবলার মর্গ্যানের তুলনায় কোচ মর্গ্যানকে অনেকটাই এগিয়ে রাখলেন বুথ, “জেমস যে ভাবে ইস্টবেঙ্গলকে সাজিয়েছে, সেটার প্রশংসা করতেই হবে। ওকে আমি তিরিশ বছর আগে থেকে চিনি। ও তখনও পরিশ্রমী ছিল, এখনও আছে। কোচ হিসেবে জেমসের ভূমিকা অসাধারণ।”
লাল-হলুদে যিনি গড়বেন-যিনি ভাঙবেন। প্র্যাকটিসে
সেই ওপারা (ডান দিকে) এবং চিডি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বুথের মুখে বিপক্ষ কোচের প্রশংসায় অনেকে আবার গভীর চালের গন্ধও খুঁজে পাচ্ছেন। কেননা মহীন্দ্রা ইউনাইটেড কিংবা মুম্বই এফসি-তে থাকাকালীন যে মেজাজি বুথের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তার সঙ্গে নতুন শান্ত স্বভাবের মানুষটিকে কিছুতেই যেন মেলানো যাচ্ছে না! উল্টে আই লিগে এখনও পর্যন্ত সালগাওকরের যা পারফরম্যান্স তা সন্তোষজনক তো নয়ই, নিম্নমানের বললেই চলে। সাত ম্যাচে মাত্র একটা জয়। শেষ তিন ম্যাচে কোনও জয় নেই। বুথের জমানায় প্রাপ্তি বলতে শুধু র‌্যান্টি-কার্লোসদের আটকে দেওয়া। আর এখানেই নতুন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ‘ছোট দলের’ মুখোশে বিষাক্ত থাবা বসিয়ে দেবেন না তো প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নরা?
লাল-হলুদ কোচ আগেভাগেই সতর্ক। ওএনজিসি-র বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জয়ে ফুটবলারদের মধ্যে যাতে আত্মতুষ্টির চোরাস্রোত বইতে না পারে, সে জন্য শূন্য থেকে শুরু করতে দেখা গেল মর্গ্যানকে। ম্যাচের আগের দিন সাধারণত দেখা যায় ঘণ্টাখানেকের অনুশীলন আর বিপক্ষ দল মাঠে আসতেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে সোজা ড্রেসিংরুমে। কিন্তু সোমবার সালগাওকর মাঠে ঢুকে পড়েছে দেখেও অনুশীলন চালিয়ে গেলেন মর্গ্যান। আর বুথ-বাহিনীকে অপেক্ষা করতে হল ক্লাব তাঁবুর ভিতরে। ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, “জানি সালগাওকর এখন অন্তর্বর্তী সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে চাই না। আবার শূন্য থেকে শুরু করব।”
সালগাওকরের ‘কভার পেজ’-এ ‘হারের আগে হারব না’র পোস্টার সেঁটে মঙ্গলবারের জন্য তৈরি হচ্ছেন বুথ। আর সেটা ঠেকাতে মর্গ্যানের দাওয়াই ‘অপরাজিত থাকার অসীম জেদ’। দুই ইংরেজ কোচের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত ‘জয় হো’ পতাকা নিয়ে কে মাঠ ছাড়েন, তা জানতে তো আর কিছু ঘণ্টার অপেক্ষা।

মঙ্গলবারে আই লিগ
• ইস্টবেঙ্গল : সালগাওকর (যুবভারতী, ২-০০)
• এয়ার ইন্ডিয়া : সিকিম ইউনাইটেড
• স্পোটিং ক্লুব : পুণে এফসি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.