রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের খাসতালুক বলেই পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়। বিধানসভায় সিপিএমের ভরাডুবির বছরেও এখান থেকে জিতেছেন সূর্যবাবু। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজের শক্ত ঘাঁটিতেও বোধ করি নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না প্রাক্তন মন্ত্রী। তাই পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই এলাকা কামড়ে পড়ে থাকছেন। রবিবার সূর্যবাবু কর্মিসভা করেছিলেন পড়িয়াচকে। আর সোমবার দু’- দু’টো সভা করলেন বেলদা থানার কুনারপুর এবং খুড়শিতে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই কর্মসূচি বলে দলীয় সূত্রে খবর। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব প্রকাশ্যে বলছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে সভা ডাক ডাকা হয়েছিল। |
এ দিন দু’টো সভাতেই সূর্যবাবুর স্বীকারোক্তি, “অনেক গরিব মানুষ এখনও ওদের (তৃণমূলের) দিকে রয়েছে। নিশ্চয়ই আমরা ওঁদের বোঝাতে পারিনি যে, ‘তোমার লড়াই আমার লড়াই এক’।” সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, “যে সব গরিব মানুষ ওদের হয়ে মিটিং-মিছিল করছেন, তাঁদের শত্রু বানিয়ে দেবেন না। বরং ওঁদের হয়ে লড়াই করুন। গরিব মানুষ গরিব মানুষই। তিনি তৃণমূল করুন কিংবা কংগ্রেস।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সংযত থাকার পরামর্শও দেন তিনি। বিরোধী দলনেতার কথায়, “মাথা গরম করবেন না। আমরা তৃণমূলের থেকে সব দিক থেকে আলাদা। যদি দেখেন, দলীয় পতাকা ওদের লোকজন ছিড়ে দিয়েছে, তবুও মাথা ঠান্ডা রাখবেন। এক-দু’টো পতাকা ছিড়ে মানুষের থেকে আমাদের দূরে সরানো যায় না।”
সোমবার সকালে প্রথমে কুনারপুরে সভা করেন সূর্যবাবু। পরে খুরশিতে। রাজ্যে পালাবদলের পর এই প্রথম কুনারপুরে সভা করল সিপিএম। পরিবেশ- পরিস্থিতি ছিল না বলেই এই ১৯ মাসের মধ্যে এখানে সভার আয়োজন করা হয়নি বলে দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন। সভার শুরুতে নারায়ণড়ের বিধায়ক নিজেও বলেন, “১৯ মাস পর এখানে সভা করছি। আগে এখানে সভা করার অবস্থা ছিল না।” দু’টো সভাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন সূর্যবাবু। তাঁর কটাক্ষ, “উনি এক জায়গায় বেশিদিন থাকতে পারেন না। একবার বিজেপি’র হাত ধরছেন। একবার কংগ্রেসের।” মনে করিয়ে দেন তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গও। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘উনি ভাবেন, আমি ডাক দিলেই সবাই চলে আসবে। তাই দরজায় দরজায় টোকা মারছেন। কিন্তু, কেউ আসছেন না। এখন ওঁর দরজাতেও কড়া নাড়ছে। ভাঙনের কড়া। প্রতিটি অঞ্চলে তৃণমূলের লোকই তৃণমূলের লোককে মারছে। পার্টিটা ভেঙে যাবে।” |