নিজস্ব সংবাদদাতা • ফালাকাটা |
এক দিকে বনে হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি বন ভূমি ও করিডর দখল থেকে শুরু করে গাছ ধ্বংস হবার কারণে মানুষ ও হাতির সংঘাত বেড়ে চলেছে। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বন দফতর।
সোমবার ফালাকাটায় অনুষ্ঠিত বন্য প্রাণ দিবসে সেটাই স্পষ্ট হল। বন দফতরের হিসেবে, ১৯৮৯ সালের গণনায় সারা পশ্চিমবঙ্গে ১৭৫ টি হাতি ছিল। বর্তমানে ওই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪৭ টি। গত বার ১৯২ গ্রামবাসী হাতির আক্রমণে মারা যান। চলতি বছরে রাজ্যে ৬৭ জনের হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে। শুধু মাত্র জলপাইগুড়িতে হাতির হানায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন জানান, হাতিকে বনের মধ্যে আটকে রাখতে তাদের প্রিয় ফলগাছ ইদানীং রোপণ করতে শুরু করা হয়েছে। মূল প্রতিবন্ধক হচ্ছে গ্রামবাসীর গবাদি পশু। জঙ্গলে ঢুকে গবাদি পশু ওই গাছের চারা খেয়ে নিচ্ছে। জ্বালানি সংগ্রহ করার নামে বাড়ন্ত গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাসীদের একাংশ। বনমন্ত্রী বলেন, “হাতি ও মানুষের সংঘাত আমাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বনাঞ্চল ঠিক রাখতে পারলে সংঘাত কমানো সম্ভব হবে। হাতির খাদ্য ভাণ্ডার বাড়ানোর চেষ্টা করছি।” |
গবাদি পশু হানা রোধ থেকে বনরক্ষা করার জন্য কর্মীর অভাব দায়ী বলে মন্ত্রী মনে করেন। খুব শীঘ্র ৫০০ জন বন কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে তিনি জানান। ট্রেনের ধাক্কায় ও গ্রামবাসীর অবৈধ বিদ্যুৎবাহী তারের বেড়ায় পৃষ্ট হয়ে হাতিমৃত্যুর ঘটনা হালে কিছুটা কমেছে। নজরদারি যাতে নিয়মিত চলে সে বিষয়ে রেল ও বিদ্যুৎ পর্ষদের সঙ্গে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালানোর জন্য তারা খুব শীঘ্রই উদ্যোগী হবেন বলে জানান তিনি। রাজ্যের হেড অব দা ফরেস্ট সম্পদকুমার বিস্ত বলেন, “দুর্ঘটনা ঘটলে কিছুদিন বাড়তি সতর্কতা থাকে। ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে সে জন্য নজরদারি চালিয়ে যাব।” গ্রামে হাতির হানা রোধে বক্সা জঙ্গলে ২টি এলিফ্যান্ট স্কোয়াড তৈরি হবে বলে বন কর্তারা জানান। ফসল ও প্রাণ হানিতে দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে বনদফতর উদ্যোগী হচ্ছে।
দলছুট মত্ত হাতির হানা রুখতে ঘুমপাড়ানি গুলি করে তাদের চিকিৎসা করানোর জন্য জলদাপাড়া জঙ্গলের পাশে খয়েরবাড়ি বনাঞ্চল লাগোয়া ১০০ বর্গ মিটার ঘেরা জায়গার বন্দোবস্ত করেছে বন দফতর। এক বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বন ও পরিবেশ দফতরে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এখনও মেলেনি। বনমন্ত্রীর কথায়, “কেন্দ্র সময় মত অনুমতি ও বরাদ্দ নানা প্রকল্পের কাজের সঙ্গে বনবস্তিতে হাতির হানা রোখার কর্মসূচি আমরা নিতে পারি।” |