|
|
|
|
আলোচনায় বসবেন আমির |
সম্মান রক্ষায় হত্যা রুখতে উদ্যোগ কতটা সফল, উঠছে প্রশ্ন |
সংবাদসংস্থা • বুলন্দশহর (উত্তরপ্রদেশ) |
সত্যমেব জয়তে-অনুষ্ঠানটিতে এসে সম্মান রক্ষার্থে খুন করার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন ২৯ বছরের আব্দুল হাকিম। তার ঠিক পাঁচ মাসের মাথায় খুন হলেন নিজেই। তাঁর স্ত্রী মেহভিশের অভিযোগ, পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে করার জন্যই এই চরম শাস্তি পেতে হয়েছে আব্দুলকে। স্বামীর মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী করেছেন নিজের বাড়ির লোককেই। এর পর হয়তো তাঁর এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের পালা, এক মেয়েকে কোলে নিয়ে এই আতঙ্কেই এখন দিন-রাত কাটছে ৯ মাসের সন্তানসম্ভবা মেহভিশের।
মেহভিশের এই অভিযোগের জেরে উঠছে কিছু নতুন প্রশ্ন। সম্মান রক্ষার্থে খুনের মতো বিষয় নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চূড়ান্ত বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছে সত্যমেব জয়তে-র মতো অনুষ্ঠান। কিন্তু জনমানসে রেখাপাত করতে কতটা সফল এই সব উদ্যোগ-আয়োজন? বার বার প্রচারের পরে এখনও কেন প্রাণ হারাতে হচ্ছে আব্দুলদের? প্রাণের ভয়ে কেন সিঁটিয়ে থাকতে হচ্ছে মেহভিশদের?
২০১০ সালের অক্টোবর মাসে দুই বাড়ির ইচ্ছের বিরুদ্ধে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন আব্দুল-মেহভিশ। এর পর শুরু হয় পালিয়ে বেড়ানো। অবশেষে দিল্লিতেই থাকতে শুরু করেন দু’জন। চলতি বছরের ৩ জুন সত্যমেব জয়তে অনুষ্ঠানটিতে এসে নিজেদের গল্পই শুনিয়েছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন এই দু’বছরে হয়তো পরিস্থিতি বদলেছে। তাই এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে নিজেদের গ্রামে ফেরেন ওই দম্পতি। গ্রামের বাড়িতেই দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হোক, এই স্বপ্ন চোখে নিয়েই সেখানে থেকে গিয়েছিলেন তাঁরা। ২২ নভেম্বর দিনেদুপুরে বুলন্দশহরের ওই গ্রামের রাস্তাতেই আব্দুলকে গুলি করে খুন করা হয়। মেহভিশের অভিযোগ, পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্যই খুন করা হয়েছে আব্দুলকে। পুলিশ যদি তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর হত, তা হলে এই পরিণতি হত না।
পুলিশের দাবি, এটা মোটেই পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য খুনের ঘটনা নয়। কারণ, আব্দুলের মৃত্যুর পর থানায় যে এফআইআর করা হয়েছে সেখানে সন্দেহভাজনদের মধ্যে মেহভিশের বাড়ির লোকের নাম নেই। তাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবে জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন মেহভিশের বাড়ির লোকজনেরাও। এই বক্তব্য মানতে নারাজ আব্দুলের বাড়ির লোকজন। আব্দুলের এই পরিণতির কথা জানার পেরে সত্যমেব জয়তে অনুষ্ঠানটির আয়োজক আমির খান উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন। আব্দুলের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করার পাশাপাশি তাঁর পরিবারের বাকিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা ও দোষীদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রেফতার করার দাবিও জানান আমির। |
|
|
|
|
|