|
|
|
|
২৬/১১-র চার বছর |
হেডলিকে দ্রুত প্রত্যর্পণ নিয়ে ভাবছে আমেরিকা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মুম্বই সন্ত্রাসের (২৬/১১) জন্য হামলার সম্ভাব্য জায়গা সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে আসা ডেভিড কোলম্যান হেডলির প্রত্যর্পণ নিয়ে আশার কথা শোনা গেল মার্কিন প্রশাসনের কাছে।
২৬/১১-র চার বছরে একটি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শারম্যান জানিয়েছেন, ডেভিড হেডলির প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত ভারতের অনুরোধ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে মার্কিন প্রশাসন। শীঘ্রই প্রত্যর্পণ নিয়ে রায় দেওয়া হবে। শারম্যান বলেছেন, “২৬/১১ সন্ত্রাসের মূল চক্রী হাফিজ সইদ। প্রেসিডেন্ট ওবামাও বদ্ধপরিকর, হাফিজ সইদের বিচার হবে।” হেডলি সম্পর্কে অবশ্য তাঁর মত, “আমি যদি ভারতীয় হতাম, আমিও চাইতাম হেডলিকে এই দেশে এনে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু আমেরিকার সরকারেরও আইন আছে। আশা করছি এই নিয়ে রায় দেওয়া হবে। হেডলি তার কাজের শাস্তি পাবে। ভারতের প্রত্যর্পণ-অনুরোধটাই এখন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের কাছে।”
২৬/১১-র পর চার বছর পেরিয়ে গেলেও কিছুই ভুলতে পারেননি ওঁদের পরিবার। ২৬/১১-য় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, সেই সব পুলিশকর্মীকে শ্রদ্ধা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। |
|
হেমন্ত কারকারেকে স্ত্রী কবিতার শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। ছবি: পিটিআই। |
ইয়েরওয়াডা জেলে কসাবের ফাঁসির পরেও নিহত পুলিশকর্মীদের পরিবারের কিন্তু একটাই কথা, যে চলে গিয়েছে, সে তো আর ফিরবে না। যেমন বললেন, হেমন্ত কারকারের স্ত্রী কবিতা, “কসাবের ফাঁসি হল বলে আমার স্বামী তো ফিরে আসবে না।” সন্ত্রাসের চার বছর পেরিয়েও মুম্বই এখনও সুরক্ষিত নয় বলেই মনে করেন কবিতা। তাঁর কথায়, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় মুম্বই এখনও নিরাপদ নয়। ২৬/১১-র পরেও মুম্বই আর পুণেতে বিস্ফোরণ হয়েছে।” কসাবের ফাঁসির ফলে সন্ত্রাসের একটা পর্ব তো শেষ হল? প্রশ্ন ছিল বিজয় সালাস্কারের মেয়ে দিব্যার কাছে। “এটা এত সহজে শেষ হওয়ার নয়। পুরো বিচার হলে সবাই শাস্তি পেলে তবে সন্তুষ্ট হব।”
২০০৮ সালের সেই নভেম্বরে মুম্বইয়ের তাজ হোটেলে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতেন অঙ্কুর চাওলা। ২৬ নভেম্বের হোটেলে কাটানো আতঙ্কের সেই ১৪ ঘণ্টা নিয়ে তিনি লিখে ফেলেছেন একটা বই। “ফোর্টিন আওয়ারস: অ্যান ইনসাইডারস অ্যাকাউন্ট অফ দ্য তাজ অ্যাটাক” নাম বইটির। অঙ্কুর কসাবের ফাঁসির খবরে দারুণ খুশি। বললেন, “২১ নভেম্বর সকালে আমি ঘুমোচ্ছিলাম। এক বন্ধু ফোন করে খবরটা জানাল। যখন বইটা লিখতে শুরু করেছিলাম, ভাবতাম বইটা যেন ২৬ নভেম্বরের আশপাশেই বেরোয়। অ্যাদ্দিনে বইটা হল। আর এ বারই কসাবের ফাঁসিও হল। অদ্ভুত সমাপতন।”
২৬/১১-য় যাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ধরা পড়েছে অঙ্কুরের বইয়ে। সেই রাতটা অঙ্কুরের মনে পড়ে এখনও। “লম্বাচওড়া চেহারার এক জন মাথায় নীল টুপি আর কাঁধে ছাইরঙা ব্যাকপ্যাক নিয়ে দৌড়তে দৌড়তে আমাদের দিকে ধেয়ে এল। রাইফেল থেকে দ্রুত গুলি চালাল। সাদা শার্ট পরা একটা ছেলে মুহূর্তে ভিজে লাল। হোটেলে কাজ করি। অনেক কিছুর জন্য তৈরি থাকতে হয়। কিন্তু এমন একটা রাতের জন্য কখনওই তৈরি ছিলাম না।”
অঙ্কুর এখন দিল্লিতে থাকেন। হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। ভাবেননি কোনও দিন বই লিখবেন। বই লিখে যে স্বস্তি পেয়েছেন, তাতে সেই রাতটা আর সে ভাবে তাড়া করবে না। চার বছর পরে অন্তত সেইটুকু তৃপ্তি। |
|
|
|
|
|