সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানতে চান না তিনি। অথচ রাজকোষ ঘাটতি কমাতে মাত্র চার সপ্তাহ আগে নিজেরই বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এঁটে উঠতে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের সামনে বড় বাধা সেই সময়ই। কারণ বাজেটের বাকি আর মাত্র তিন মাস। মাথার উপর ঝুলছে মূল্যায়ন সংস্থাগুলির রেটিং কমানোর হুমকির খাঁড়া।
এই পরিস্থিতিতে খরচ কমাতে মরিয়া চিদম্বরম বেশ কিছু কড়া সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়েছেন।
যেমন:
• পাঁচ-তারা হোটেলে সরকারি অফিসারদের সম্মেলন করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি
• তাঁদের ভ্রমণ ও যাতায়াতে বিধিনিষেধ আরোপ
• শূন্য পদে নিয়োগ বন্ধ রাখা।
চিদম্বরম চান, যে কোনও উপায়ে চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি জাতীয় আয়ের ৫.৩ শতাংশে বেঁধে রাখা। সেই অঙ্গীকারই তিনি করেছিলেন চার সপ্তাহ আগে। এখন বিভিন্ন মন্ত্রকের খরচে রাশ টেনে সেই লক্ষ্যে এগোতে কৃতসংকল্প তিনি। তাই যেখানেই ফাঁক- ফোকর গলে অপ্রয়োজনীয় খরচের সুযোগ রয়েছে, সেখানেই অপ্রিয় হলেও অর্থমন্ত্রী কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, অক্টোবরেই মূল্যায়ন সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরসের হুমকি, অর্থনীতির হাল না-ফিরলে আগামী ২৪ মাসের মধ্যে তারা ভারতের মূল্যায়ন কমাবে। এবং তার সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশের মতো। সে ক্ষেত্রে মার খাবে ভারতে লগ্নির পরিবেশ। বাড়বে বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার খরচ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে চিদম্বরম শেষ রক্ষা করতে জারি করছেন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা। এ সব ফতোয়ার কারণ, লক্ষ্যমাত্রা নামিয়ে আনার পক্ষপাতী নন তিনি। যদিও অর্থনীতিবিদরা চিদম্বরমের লক্ষ্যপূরণ নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান। তাঁদের আশঙ্কা, ওই ঘাটতি ৬ শতাংশের কম হবে না। পাশাপাশি, সরকারি সূত্রের খবর, রাজস্ব ঘাটতি ছুঁয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। টুজি স্পেকট্রাম নিলাম খাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা তোলার আশাও পূরণ হয়নি। নিলাম বাবদ হাতে এসেছে সবর্সাকুল্যে লক্ষ্যমাত্রার ২৫% অর্থ।
তবে অতীতে দু’বার অর্থমন্ত্রী হিসেবে যে-ভাবে সংস্কারের চাকাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, তা এ বারও তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতাকে এগিয়ে রেখেছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতে তিনি অর্থনীতিকে টেনে তুলবেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। |