আবার নজির গড়ে সোনার দাম ৩৩ হাজারে
ফের রেকর্ড ছুঁল সোনা। সোমবার ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার টাকা। গত এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত মাত্র সাত মাসে বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ৪৭০০ টাকা। যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোনার এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ কী? এটা ঠিক যে, বিয়ের মরসুম চলছে। শুরু হতে চলেছে বড়দিনের উৎসবের মরসুমও। সাধারণত উৎসবের মরসুমে প্রতি বছরই সোনার চাহিদা বাড়ে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এটাকেই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন না স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহল। তাঁদের মতে, দাম বাড়ার মূল কারণ টাকার দাম কমা। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম তেমন না-বাড়লেও ভারতে তা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
টাকার দাম কমার সঙ্গে সোনার দাম বাড়ার সম্পর্ক কী? ভারতে সোনা উৎপন্ন হয় না বললেই চলে। চাহিদার প্রায় পুরোটা আমদানি করেই মেটাতে হয়। তাই টাকার দাম কমলে সোনা আমদানির খরচও বেড়ে যায়। ফলে দেশের বাজারে দাম বাড়ে সোনার।
টাকার দামের লাগাতার পতন তাই সোনা ব্যবসায়ীদের বিশেষ করে ভাবাচ্ছে। গত পাঁচ দিন ধরে সমানে পড়ছে টাকার দাম। সোমবারও ডলারের পরিপ্রেক্ষিতে টাকার দাম পড়েছে ২২ পয়সা। এ দিন বিদেশি মুদ্রার বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৫৫.৭৩ টাকা। তাঁদের মতে, এই পতন রুখতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপ জরুরি। টাকার দাম ডলার পিছু ৫৬ টাকা ছুঁলে শীর্ষ ব্যাঙ্ক হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।
এই পরিস্থিতিতে সোনার দাম কমার কি সম্ভাবনা আছে? মাঝে মধ্যে সামান্য কিছু সংশোধন বা ‘কারেকশন’ হলেও স্থায়ী ভাবে দাম কমার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন সোনার বাজার বিশেষজ্ঞরা। কারণ, সোনা আমদানি খাতে বিদেশি মুদ্রার একটা বড় অংশ খরচ হয়ে যাওয়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিশেষ কমিটি সোনার আমদানি শুল্ক আরও বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। গত বাজেটে সোনার উপর আমদানি শুল্ক ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রের খবর, সেই হার আরও ২ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে ওই কমিটি। সুপারিশ কার্যকর হলে সোনার দাম আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহল।
তবে আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে সোনার ব্যবহার কমানো যাবে বলে মনে করেন না অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়া। তিনি বলেন, “চলতি আর্থিক বছরের প্রথম দুই ত্রৈমাসিকে দেশে সোনা আমদানি আগের বারের থেকে প্রায় ৪০% কমেছে। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে তা ফের বাড়তে শুরু করেছে। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আগের বারের থেকে তা বেড়ে গিয়েছে ৯%-এর বেশি। বিয়ে এবং উৎসবের মরসুমে সোনার চাহিদা বেড়ে যাওয়ার জন্যই আমদানি বাড়ছে।” ২০১১-তে দেশে মোট সোনা আমদানি হয়েছিল ৯৬৯ টন। সেখানে ২০১২-র অক্টোবর পর্যন্ত আমদানি প্রায় ১৫০ টন কমেছে। ব্যবসায়ী মহলের মতে, পুরো বছরে আমদানি দাঁড়াবে ৭০০ টনের মতো।
আমদানি কমলেও সোনার চাহিদা এবং ব্যবহার আদৌ কমেনি বলে দাবি করছেন বামালুয়া। তিনি বলেন, বলেন, “আমদানি শুল্ক বাড়ার পর চোরাপথে সোনা আসা বেড়ে গিয়েছে। তাই বাজারে সোনার সরবরাহে কোনও ঘাটতি নেই। মাঝে থেকে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার উভয়েই শুল্ক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।” সোনার চাহিদা বাড়ার আর একটি কারণ হল লগ্নি। সোনার দাম টানা বাড়তে থাকায় এবং শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তার ফলে সোনায় লগ্নিও বেড়ে গিয়েছে দ্রুত। যার ফলে এ বার ধনতেরাসের দিন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ গোল্ড এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) লেনদেন হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.