নতুন জলপ্রকল্প ঘিরে আশায় সাঁইথিয়াবাসী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁইথিয়া |
জল নিয়ে সাঁইথিয়া শহরের সমস্যা বহুদিনের। এমনিতেই এই শহরে পুকুর বা কুয়োর সংখ্যা যথেষ্ট কম। তাও গরমের সময় তার অধিকাংশতেই জল থাকে না। আর যে দু’ চারটে টিউবওয়েল আছে তাতেও ভালো করে জল ওঠে না। এমনকী শহরের গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ময়ূরাক্ষী নদীর জলেও সমস্যা মেটে না শহরবাসীর। ভরসা বলতে পুরসভার ট্যাপকলের জল। কিন্তু তাও প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। তাই ওই কল থেকে জল নেওয়ার সময় বচসা, হাতাহাতি থেকে থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়!
জলসঙ্কটে ভোগা শহরবাসীর কাছে ভাল খবর নিয়ে এল ‘জহরলাল নেহেরু আর্বান রিনিউআল মিশন’। ওই প্রকল্পে প্রায় ১৩ কোটি টাকার (যার ৮০ শতাংশ কেন্দ্র, ১৫ শতাংশ রাজ্য ও ৫ শতাংশ পুরসভা দেবে) আর্থিক অনুদানে সাঁইথিয়ার জন্য একটি জলপ্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অচিরেই সাঁইথিয়া শহরের জল সমস্যা মিটবে বলে মনে করছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
এর আগেও অবশ্য কংগ্রেস পরিচালিত সাঁইথিয়া পুরসভা জনগণের জল সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছিল। বিশেষ করে গত পুরনির্বাচনের আগে দলের পক্ষ থেকে শহরবাসীকে দিনে তিনবার জল দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ এলাকাবাসীরই অভিযোগ, পুরসভা ওই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। |
এখানেই গড়ে উঠবে জলাধার। ছবি: অনির্বাণ সেন। |
গত শুক্রবার নতুন ওই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে পুরপ্রধান বীরেন্দ্রকুমার পারখ অবশ্য তার জন্য প্রতিকূল পরিস্থিতিকেই দায়ী করলেন। কিন্তু সেই ‘প্রতিকূল পরিস্থিতি’টি ঠিক কী ছিল তা খোলসা করে বলেননি। তাঁর দাবি, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে (মোট ৫০টি) সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে জলের সমস্যা কিছুটা হলেও মেটানো হয়েছে। তবে পুরপ্রধান অবশ্য নতুন এই জল প্রকল্পকে ঘিরেই আশার আলো দেখছেন।
ওই প্রকলল্পের টাকাতেই সাঁইথিয়ার কুতুবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এক নতুন জলাধার তৈরি হবে। যার জল ধারণ ক্ষমতা ২.২৭ লক্ষ লিটার। সেই জলাধারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে পুরপ্রধান বলেন, “আশা করি এ বার শহরবাসীর জল সমস্যা দূর হয়ে যাবে।” বর্তমানে সাঁইথিয়ায় একটি ৫ লক্ষ ও আর একটি ২.৭০ লক্ষ লিটারের জলাধার আছে। ওই দু’টি জলাধারের উপরই সাধারণ মানুষকে নির্ভর করতে হয়। তবে পুরসভারই অন্য একটি অংশ মনে করছে, বর্তমানে জলের যা চাহিদা তাতে নতুন জলাধারেও সমস্যা পুরোপুরি মিটবে না। তাই পুরসভা এখন থেকেও আরও একটি জলাধার তৈরির কথা ভাবা শুরু করেছে।
নতুন প্রকল্প খানিকটা হলেও আশা জাগালেও পুরবাসীর আশঙ্কা পুরোপুরি মিটছে না। নেতাজি পল্লির বিজলী গুহ, মনসা পল্লির রাসকালীতলার সন্তোষ দত্তের প্রশ্ন, “সবার ঘরে জলের সংযোগ দেওয়া হবে তো?” সাঁইথিয়া পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, “এক বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হবে। সাধ্যমতো ঘরে ঘরে জলসংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।” |