ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়ূরেশ্বর |
ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য জাল শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠল ময়ূরেশ্বরে। ঘটনায় তৃণমূল ও সিপিএম একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের ভোট বাড়াতে দু’দলের নেতারা বেআইনি ভাবে ভোটার তালিকায় নাম তোলাতে উঠে পড়ে লেগেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে ভোটার তালিকা সংযোজন-বিয়োজনের কাজ শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুসারে ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স হওয়া প্রয়োজন। বয়সের উপযুক্ত প্রমাণপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়। তারপর সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, প্রশাসনিক আধিকারিক ও আবেদনকারীর উপস্থিতিতে শুনানি হয়। শুনানিতে উপযুক্ত বয়স প্রমাণিত হলে ভোটার তালিকায় আবেদনকারীর নাম নথিভুক্তির জন্য বিবেচিত হয়।
সেই মতো ময়ূরেশ্বর দাসপলশা পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামে টুম্পা খাতুন, আবুল বাশার, রুকসানা খাতুন, আবসার শেখদেরর আবেদনপত্র জমা পড়েছে। কিন্তু স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, উপযুক্ত বয়স না হলেও তৃণমূলের মদতে তাঁরা স্থানীয় একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের জাল শংসাপত্র জমা দিয়েছেন। সিপিএমের দাসপলশা লোকাল কমিটির সদস্য মহম্মদ মকরম আলি-র দাবি, “আমরা সমস্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।” ওই সব আবেদনকারীর পক্ষে তাঁদের অভিভাবক নুরহাদ শেখ, নাজির শেখরা অবশ্য বলেন, “অজ্ঞানতাবশত স্কুলে ভর্তির সময় ছেলেমেয়েদের বয়স কমিয়ে বলেছিলাম। পরে সংশোধন করা হয়।” কোনও জাল শংসাপত্র জমা দেননি বলেই তাঁদের দাবি।
একইরকম অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধেও। ওই পঞ্চায়েতেরই ছোটতুড়িগ্রামের খাইরুল শেখ, রাজেশ শেখ, সানাউল্লাহ শেখ, শফিউল্লাহ শেখ-সহ ৯ জন অপ্রাপ্তবয়স্কের নাম বেআইনি ভাবে সিপিএমের মদতে জমা দেওয়া হয়েছিল বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। তৃণমূলের স্থানীয় বুথ কমিটির সভাপতি হাফিজুদ্দিন শেখের অভিযোগ, “সিপিএমের মদতে ওই সব আবেদনকারীরা জাল শংসাপত্র দাখিল করেছিল। তাই প্রকৃত বয়স জানাজানি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অধিকাংশ আবেদনকারী নির্দিষ্ট দিনে শুনানিতেই হাজির হয়নি।” তাঁর দাবি, কয়েকজনের অভিভাবক হাজির থাকলেও তাঁরা ছেলেমেয়েদের বয়সের উপযুক্ত প্রমাণপত্র জমা দিতে পারেননি। যদিও, আবেদনকারীদের পক্ষে তাঁদের অভিভাবক রশিদ শেখ, হামসের শেখদের পাল্টা দাবি, “তৃণমূল আমাদের নামে মিথ্যা অভিযাগ করছে।”
এই ঘটনায় অবশ্য দু’টি রাজনৈতিক দলই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অন্য দিকে, ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের যুগ্ম বিডিও মলয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উভয়পক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |