স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন দেখতে যাওয়ার সময়ে ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন হলেন এক ব্যক্তি। রবিবার রাতে কালনার কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের সহজপুর গ্রামের ঘটনা। নিহতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। কেন এই খুন, সে ব্যাপারে অবশ্য পুলিশ সোমবার কিছু জানাতে পারেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে সহজপুর বাজারের কাছে একটি জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানের অনুষ্ঠান ছিল। প্রতি বারই এই ভাসান উপলক্ষে প্রচুর বাজি পোড়ানো হয়। স্ত্রী নাগি হেমব্রম ও বছর দশের ছোট ছেলে বিশ্বজিৎকে সঙ্গে নিয়ে তা দেখতে যাচ্ছিলেন পেশায় খেতমজুর চাতর হেমব্রম (৪৫)। তাঁর বাড়ি সহজপুর বাজার থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ। |
পুলিশের কাছে অভিযোগে চাতরবাবুর স্ত্রী নাগিদেবী জানান, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছুটা যাওয়ার পরে রাস্তার পাশে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যান তাঁর স্বামী। সেই সময়ে আচমকা এসে হাজির হয় গ্রামের বছর ত্রিশের যুবক ধীরেন হেমব্রম। হঠাৎ পিছন থেকে সে ধারালো অস্ত্র দিয়ে চাতরবাবুকে কোপাতে থাকে। আচমকা এমন হামলা প্রতিরোধের সুযোগ পাননি চাতরবাবু। নাগিদেবীর কথায়, “এমন ঘটনা দেখে আমি ছুটে গিয়ে ধীরেনকে থামানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সে আমাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে ছুটে পালিয়ে যায়। চোখের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় মারা যায় আমার স্বামী।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার পরে রক্তমাখা হাঁসুয়া হাতে ধীরেন দৌড়ে পালায় কাছাকাছি একটি ফুটবল মাঠে। রাতে যখন তাকে গ্রেফতার করা হয় তখন সে একটি ইটের গাদার সামনে হাঁসুয়া হাতে দাঁড়িয়েছিল বলে জানায় পুলিশ। কী কারণে এই খুন, তা অবশ্য এখনও জানাতে পারেনি পুলিশ। নিহতের স্ত্রীর দাবি, “আমার স্বামীর সঙ্গে ওই যুবকের কোথাও কোনও ঝগড়া বা অশান্তি হয়েছিল কি না, আমি জানি না।” গ্রামের যুবক চণ্ডী মুর্মু বলেন, “ধীরেন প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিশেষ মেলামেশা করে না। তেমন কাজকর্মও করে না। কেন এমন ঘটনা ঘটাল, তা আমরা কেউই বুঝতে পারছি না।”
পুলিশ জানায়, ধৃতের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা রয়েছে। সোমবার কালনা আদালতে তোলা হলে ধৃতকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। চাতরবাবু ও নাগিদেবীর তিন ছেলে। বড় ছেলে প্রদীপ স্থানীয় হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সোমবার সে বলে, “বাবাই ছিল সংসারের রোজগেরে সদস্য। এর পরে কী ভাবে চলবে জানি না।” |