দু’দিনের ভোগান্তি শেষ
ভাড়ার নয়া তালিকা, বাস ধর্মঘট উঠল ডুয়ার্সে
ভাড়া নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ডাকা বাস ধর্মঘট শেষমেশ উঠে গেল। দু’দিন ভোগান্তির পরে অব্যাহতি পেলেন যাত্রীরা।
ভাড়ার সরকারি তালিকায় বিভ্রান্তি কাটাতে রাজ্য সরকার টালবাহানা করছে, এই অভিযোগ তুলে কোচবিহারের মাথাভাঙা, ডুয়ার্সের জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন বাস মালিকেরা। তার জেরে শুক্রবারের পরে শনিবারও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে যায়। তবে রাত ৮টা নাগাদ জেলা পরিষদের তরফে নতুন ভাড়ার তালিকা পৌঁছে দেওয়া হয়। তার পরেই, বাস মালিক সংগঠনের কর্তারা জানান, তাঁরা ধর্মঘট তুলে নিচ্ছেন।
আজ, রবিবার থেকে স্বাভাবিক ভাবেই বাস চলবে।
এ দিন সপ্তাহান্তেও ধর্মঘট চলায় যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে। নিত্যযাত্রীদের ভরসা বলতে ট্রেন। যাঁরা ট্রেনে উঠতে পারেননি, তাঁদের চড়া হারে ট্যাক্সি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বিকেলেই বলেন, “যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা শুনেছি। বাস মালিকদের ধর্মঘট তুলতে অনুরোধ করেছি।”
জলপাইগুড়ি মিনিবাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক গৌরব চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, “সরকার এক-এক সময়ে এক-এক রকম তালিকা দিচ্ছে। যাত্রীদের সঙ্গে বাসকর্মীদের গোলমাল মারপিটে পৌঁছচ্ছে। কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশাসনকে দেখতে হবে। ভাড়ার নতুন তালিকা হাতে পেলে তবেই রাস্তায় বাস নামবে।”
সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় নিয়ে গোলমালের জেরে বেসরকারি বাস মালিকেরা শুক্রবার থেকে ময়নাগুড়ি ও মাথাভাঙা-সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন রুটে ধর্মঘট শুরু করেছিলেন। তার জেরে ময়নাগুড়ি-শিলিগুড়ি, ময়নাগুড়ি-জলপাইগুড়ি, এবং জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি রুটেও পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বাস মালিকেরা জানান, রাজ্য সরকার কলকাতা থেকে নতুন ভাড়ার তালিকা ঘোষণা করলেও তা জলপাইগুড়িতে পাঠানো হয়নি।
ভাড়ায় নজর
১৬ নভেম্বর ভাড়া কমানোর সরকারি ঘোষণা।
১৮ নভেম্বর কী করণীয়, তা রাজ্যের কাছে জানতে চাইল জেলা প্রশাসন।
১৯ নভেম্বর রাজ্যের নির্দেশে নতুন ভাড়ার কাঠামো পাঠানোর প্রস্তুতি।
২১ নভেম্বর জেলা তালিকা পাঠাল পরিবহণ দফতরে।
২২ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সে মহাকরণ থেকে জানানো হল, ফের নতুন তালিকা তৈরি করতে হবে।
অন্য দিকে নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভ ছিল, বাস মালিকেরা আগাম কিছু না জানিয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে তাঁদের হয়রান করছেন। ডুয়ার্সের নিত্যযাত্রী সংগঠনের সদস্য প্রসেনজিৎ দত্তের কথায়, “ভাড়া নিয়ে বাসকর্মীদের সঙ্গে নিত্য অশান্তি হচ্ছিল। কাগজে যে ভাড়ার কথা পড়ছি আর কন্ডাক্টর যে ভাড়া চাইছিলেন, তার মধ্যে কোনও মিল নেই। এর পরে দু’দিন বাস বন্ধ থাকায় কর্মস্থলেও যেতে পারিনি।”
গত শুক্রবার মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে প্রশাসনের তরফে আপাতত ২০০৮ সালের ভাড়ার তালিকা মেনে চলার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা যে ফলপ্রসূ হবে না সেটা সম্ভবত প্রশাসনের আধিকারিকেরাও আগাম আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। সে কারণেই বাস মালিকদের ভাড়ার তালিকা পাওয়ার জন্য কিছু দিন অপেক্ষা করার
অনুরোধ করেছিলেন তাঁরা। যদিও মালিকপক্ষ তাতে সাড়া দেননি। তাঁদের বক্তব্য ছিল, গত ১৬ নভেম্বর রাজ্য সরকার যে ভাড়া কমানোর কথা ঘোষণা করেছে, সেটা তাঁদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তাঁরা ৩১ অক্টোবরের স্থির করা ভাড়াই মেনে চলবেন। অন্যথায় বাস চালাতে পারবেন না। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সুপার বাস ওনার্স আসোসিয়েশনের কার্যকরী সদস্য এবং উত্তরবঙ্গ মোটর ট্রান্সপোর্ট আসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, “সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ৩১ অক্টোবর প্রকাশ করা তালিকাই মেনে চলব।”
জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসুর বক্তব্য, “বাস ভাড়া নিয়ে এমন বিভ্রান্তি রাজ্যে নজিরবিহীন। দ্রুত বেসরকারি বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।” রাতে জট কেটে যাওয়ায় সব পক্ষই আপাতত স্বস্তিতে। তবে এই নিয়ে ফের কোনও জটিলতা হলে তাঁরা আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন বলে বাস মালিকেরা হুমকি দিয়ে রেখেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.