মনোরঞ্জন ১...
ইন্ডাস্ট্রি Vs দত্ত

আমার ‘অটোগ্রাফ’ ভাল লাগেনি। ও (সৃজিত) সেটা জানে। ও আশা করে আমি পরিচালক হিসেবে ওকে আরও বেশি প্রশংসা করব।’ ...সৃজিত যখন প্রথম গল্পটা (২২শে শ্রাবণ) শোনায়, আমি সৃজিত আর শ্রীকান্তকে বলেছিলাম আমি চুক্তি করতে চাই। চুক্তিটা হবে আমার যে সব সিন ওকে হয়েছে, কোনও মতে সেগুলো বাদ দেওয়া যাবে না... একটা ফাইনাল স্ক্রিপ্ট রিডিং হয়েছিল । সেখানেই সৃজিত বলে যে ও শেষটা বদলে দিয়েছে...আমি প্রধান ভিলেন বলে ছবিটা করতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু এ তো দেখছি জাস্ট একজন কনভিক্ট। আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়...

কয়েকটা ভুল তথ্য সংশোধন করা দরকার
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের জবাব
সাক্ষাৎকার মাত্রই ব্যক্তিগত মতামত। তাই সেটা নিয়ে কিছুই বলার নেই। কার ছবির কী মান, কে কেমন মানুষ— এই নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। লোকে কেন যে বলে কিছু মানুষ কোনও চিত্রনাট্য পড়ে, অভিনেতা হিসেবে তা রিজেক্ট করে, কিছু মাস পরে সেই একই থিমে ছবি বানায়, কিংবা অভিনয় করার শর্ত হিসেবে প্যাকেজ ডিলে জোর করে সঙ্গীত পরিচালকের নাম ঢোকায়— তাও আমার অজানা। কিন্তু শনিবারের ‘পত্রিকা’য় একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে যে কয়েকটি ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে সেটা সংশোধন করা দরকার।
‘২২শে শ্রাবণ’ একটি টেলিফিল্ম হিসেবে লেখা হয় ২০০৮ সালে অগস্ট মাসে। বেঙ্গালুরু শহরে বসে। এটি পরিচালনা করার কথা ছিল পরমব্রতর (তখন ইন্ডাস্ট্রিতে আমি ওই একজনকেই চিনতাম)। এবং নানা লোককে ও প্রোডাকশন হাউজকে মেলও করা হয়েছিল স্ক্রিপ্ট। এই মেলগুলো পরে নানা অভিযোগ খণ্ডন করতে কাজে লাগে এবং যে কারণে ‘২২শে শ্রাবণ’য়ের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের সূচিতে gmail.com এরও নাম আছে । এই চিত্রনাট্যের গল্প, যেখানে প্রবীর খুনি এবং নিবারণ রেড হেরিং, ‘২২শে শ্রাবণ’ সিনেমার সঙ্গে হুবহু এক তো বটেই, এমনকী নামগুলোও এক। এবং শেষ তথ্য হল ‘ম্যাডলি বাঙালি’ শ্যুট শুরু হয়েছিল ডিসেম্বর ২০০৮এ। এগুলো থেকে দু’টো জিনিস পরিষ্কার— এক অঞ্জন দত্ত বা কারও পক্ষেই এই ধরনের কোনও গল্প আমাকে ‘লিক’ করা অসম্ভব। কারণ আমি তখন এই ইন্ডাস্ট্রিরই অংশ নই। দুই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কথা মাথায় রেখে কোনও ভাবে ‘২২শে শ্রাবণ’য়ের কোনও অংশ পাল্টানো হয়নি। প্রবীর বরাবরই খুনি ছিল।
তবে হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, ছ’জন বাদ দিয়ে (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং আমার টিমের চার জন) ‘২২শে শ্রাবণ’য়ের উপসংহারের কথা আমার ইউনিট বা আর্টিস্টদের মধ্যে কেউ জানত না। ওই দু’দিনের শ্যুটিং শিডিউলও ছিল না। বা স্ক্রিপ্টেও তার কোনও উল্লেখ ছিল না। ঠিক করা হয়েছিল ‘কুহেলি’ ছবির মতো প্রথমে কাউকে বলাও হবে না যাতে থ্রিলারের শেষটা ফাঁস হওয়া থেকে যত দূর অবধি রক্ষা করা যায়। এবং এই উপসংহারহীন স্ক্রিপ্ট শোনানোর পর কিছু মানুষ জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “নাম ‘২২শে শ্রাবণ’ কেন? নিবারণ রবীন্দ্রনাথের কোনও কবিতা ব্যবহার করল না কেন?” আমি বলেছিলাম, কারণ আছে পরে বলব। সব মিলে যাবে। কিন্তু তার পর যখন বোঝা গেল কিছু অভিনেতার কাছে ছবিটির স্বার্থের থেকে কে কটা খুন করছে, আর কে কতটা হাততালি কুড়োচ্ছে বেশি জরুরি, যখন বোঝা গেল দুটো বাড়তি সিনের জন্য একটা রোল কিছু চোখে ‘দুর্ধর্ষ’ থেকে ‘কিছু না’য় পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে, তখন শেষটুকুও বলা হয় তাঁদের।
তৃতীয়ত আমি কারও প্রশংসা বা নিন্দের মুখ চেয়ে ছবি বানাই না। বানাই নিজের গল্পটা নিজের মতো করে বলার তাগিদে, নিজের গরজে। প্রশংসা পেলে ভাল লাগে। নিন্দে পেলে খারাপ। কিন্তু সেই তালিকায় সেই মানুষদের নাম আসে যাঁদের আমি মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করি। প্রেরণা হিসেবে দেখি। এমন কারও প্রশংসা বা নিন্দে নয় যাঁর মতামত এবং প্রিয় পরিচালক/ মানুষ/শিল্পী/ বন্ধুর লিস্ট কার্যসিদ্ধির তাগিদে মাসে, দিনে এমনকী ঘণ্টার হিসেবে পাল্টাতে দেখেছি।
ও আর হ্যাঁ, আমার বক্তব্যতেও একটা উপসংহার রাখছি। আমার বাড়ি গোবিন্দপুরে, কাজেই আমার প্রজন্মের কোনও বুদ্ধিদীপ্ত পরিচালক কোনও কটাক্ষ করতে চাইলে অনুপ্রাস করতেন গোদার আর গোবিন্দপুর নিয়ে। বেলা টার আর বেনিয়াপুকুর নিয়ে নয়। যেহেতু বেনিয়াপুকুরে ইন্ডাস্ট্রির একজনই থাকেন, অন্তঃসারহীন আঁতেল হওয়ার কটাক্ষটা কার প্রতি সেটা বোঝার জন্য বেলা টার বা বোস হওয়ার প্রয়োজন নেই। সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হলেই চলে।

‘কৌশিকের ছবি আমার ভাল লাগে না। ও বড্ড তাড়াহুড়ো করে ছবি করে।’

ছোট মুখে বড়দের কথা
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের জবাব
এক জন ঢাকিকে যদি নাগাড়ে বলতে থাকেন ‘তুমি ভাই ঢাক বাজাতে পার না...ঢাক বাজাতেই পার না’, বিরক্ত ঢাকি এক সময় ঠিক নিজের ঢাক নিজেই বাজাতে শুরু করবে। তখন তাঁকে ভুল বোঝাটা অনুচিত হবে।
আমি একটু বাজাচ্ছি আমার ঢাকটা। নিরুপায় হয়ে। বছরে একটা বা বড়জোর দুটো ছবি বানাতে পারি আমি। সেই আমাকেই যদি বলা হয়, “বড্ড তাড়াহুড়ো করে ছবি বানায় ও।” সেটা কি ঠিক কথা?
আমারই তো বেশি ছবি করা দরকার। গান জানি না, নাটক করি না। আয় হবে কোত্থেকে?
‘জ্যাকপট’ ছবিটা দেখে ঋতুপর্ণ ঘোষ আমার চিত্রনাট্যে খুশি হয়ে আমার সঙ্গে কাজ করার জন্য মনস্থির করেন। হতেই পারে অঞ্জনদার ‘ওয়ারিশ’, ‘জ্যাকপট’, ‘ব্রেকফেল’, ‘শূন্য এ বুকে’, ‘আরেকটি প্রেমের গল্প’ ... কোনও ছবিই ভাল লাগেনি। হয়তো ‘শব্দ’ বা c/o Sir’ দেখে আমার কাজ ওঁর প্রথম ভাল লাগবে, বা লাগলই না। আমি অপেক্ষা করব, কারণ প্রশংসা ব্যাপারটাই সাবজেকটিভ। আমার যেমন, ‘বো ব্যারাকস ফরএভার’ পুরস্কৃত হয়নি বলে খুব দুঃখ হয়েছিল। ওই সাবজেকটিভ...
এটাও বাস্তব আমার ছবি দেখতে হলে নিয়মিত লোক হয়। টুকটাক বড় ছোট পুরস্কারও জুটে যায়! বার্লিন, লন্ডন, দুবাই, জাপান-টাপানেও যায় আমার ছবি। কেন? ওই সব নির্বাচকের রুচি আলাদা সেটা অন্তত বোঝা যাচ্ছে। একই প্রযোজক আমার সঙ্গে বারবার কাজ করতে চায়। কেন? সবার তো তা হয় না। কেন হয় না? ঢাক নামালাম। বাজানোর জন্য প্লিজ মার্জনা করবেন পাঠকেরা। এই যে আয়োজন করে মাঝে মাঝেই পত্রিকার পাতায় ছোটদের পোস্টমর্টেম করার কী দরকার? একটা ট্রেড এথিক্স থাকবে না? নাপিত নাপিতের দাড়ি কাটলে কিন্তু পয়সা নেয় না। ওঁদের এথিক্স। বোধ হয় কারও কারও টিভিতে ‘জুনিয়র মাস্টার শেফ’ প্রোগ্রাম দেখা দরকার। কী ভাবে বড় রাঁধুনিরা কচি রাঁধুনিদের উৎসাহ দিতে দিতে রান্না শেখায়।
আগেও বলেছি টিভিতে, প্লিজ যা যা বলার ফোন করে বলো। যদি সত্যি চাও আমরা শিখি তা হলে খবরের কাগজটা কোনও মাধ্যম নয় সহকর্মীকে মতামত জানাবার। আমি তো ফোন ধরি! অন্যরা মাঝখান থেকে মজা পায়। পার্লামেন্টে লাইভ টেলিকাস্টের উত্তেজনা দেখার মতো সুযোগ আমরা যেন দিয়ে না ফেলি। এইটুকুই। বড়দের অনেককেই আমরা আসলে খুব ভালবাসার, শ্রদ্ধা করার চেষ্টা করি। কিন্তু কেউ কেউ বারবার নিজেই পুকুরে ঢিল মেরে ছবিটা গুলিয়ে দেন, নাড়িয়ে দেন। আবার জল স্থির না হওয়া পর্যন্ত আমাদের মন ভাল থাকে না জানবেন।
ইতিহাস কিন্তু ইন্টারভিউ পড়ে রচিত হয় না। হয় শুধু কাজ দেখে।

রানাকে অরিজিৎ দত্তের কাছে কে নিয়ে গেল, আইনক্সের পঙ্কজের সঙ্গে কে আলাপ করাল? ‘সারেগামা’র করিমের সঙ্গে মিটিংটাই বা কে করাল?

আমাকে নিয়ে যাননি
রানা সরকারের জবাব
‘আবার ব্যোমকেশ’ মুক্তির সময় যে সমস্যা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে অঞ্জন দত্ত কোনও বক্তব্য রাখতে রাজি হননি। ছবিটির প্রচারেরও তিনি কোনও উদ্যোগ নেননি। তখন তিনি ‘দত্ত vs দত্ত’র শ্যুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।
তা ছাড়া দাদুলদা (অরিজিৎ দত্ত) বা পঙ্কজের কাছে কেউ আমাকে নিয়ে যাননি। আমরা তাঁদের সঙ্গে নিজেদের ‘কানেকশন’এর ভিত্তিতেই যোগাযোগ করি।
তবে হ্যাঁ ‘সারেগামাপা’র করিমের কাছে আমরা একসঙ্গে গিয়েছিলাম একটা পুরনো গান ব্যবহারের অনুমতি নেওয়ার জন্য। এমনকী ‘আবার ব্যোমকেশ’এ যে সব ভুল হয়েছিল সেগুলো অঞ্জন দত্তকে সংশোধন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেটা উনি করেননি।

দত্ত vs ইন্ডাস্ট্রি


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.