পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বামপন্থী আন্দোলনকে জেলায় নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্তের অভিযোগ তুলে সরব হলেন কোচবিহারের বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। বুধবার কোচবিহার শহিদবাগে বামফ্রন্টের সমাবেশে ওই অভিযোগ তুললেন বাম নেতারা। ফরওয়ার্ড ব্লকের পাশাপাশি সিপিএম জেলা পুলিশ সুপারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে। সমাবেশের পাশাপাশি মিছিল করে তৃণমূলের সন্ত্রাস, পুলিশের পক্ষপাতের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “যাঁদের কাছে আজকের ডেপুটেশন তাঁরাই বামপন্থীদের শেষ করার চক্রান্ত করছেন। এসপি জেলায় আছেন কি না জানি না। তবে বামপন্থীদের যে শেষ করা যাবে না, তা এদিনের সমাবেশে স্পষ্ট। এসপি পক্ষপাত করছেন।” তিনি জানান, জনপ্রতিনিধিরা দেখা করতে গেলে দাঁড় করিয়ে রাখছেন। কথাবার্তাও ঠিকঠাক বলছেন না। নিচু তলার পুলিশ কর্মীরা প্রভাবিত হচ্ছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তারিণী রায় একধাপ এগিয়ে বলেন, “এসপি যতই সাহায্য করুন জেলায় অত্যাচারী তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। মানুষ এই দুঃশাসনের পরিবর্তন চাইছে।” তারিণীবাবু জানান, আজকের কর্মসূচি বানচাল করতে তৃণমূল সন্ত্রাস করতে চাইছে বলে আগাম জানানো হয়েছিল। তার পরেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। |
সমাবেশে আসার সময় তুফানগঞ্জে সমর্থকদের বাস থেকে নামিয়ে মারধর করেছে তৃণমূল। পুন্ডিবাড়িতেও এক সমর্থককে একই কারণে মারধর করা হয়। আগে পুন্ডিবাড়িতে অবরোধ তোলার নামেও তৃণমূল পুলিশের সামনে হামলা চালিয়েছে। সাংসদ, বিধায়করা আক্রান্ত হচ্ছেন। পুলিশ সুপার ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তুফানগঞ্জে এদিনই এক মহিলা-সহ পাঁচ জনকে মারধর করা হয়েছে।
বামফ্রন্টের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্মারকলিপি নিয়েছেন। তিনিই যা বলার বলবেন।” আর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত সিংহ বলেন, “জেলায় পুলিশ পুরো নিরপেক্ষভাবেই কাজ করছে। অভিযোগগুলি ঠিক নয়।” বামেদের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “কর্মসূচিতে লোক টানতে না পেরে ওই সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।” সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে উদয়ন গুহ এ দিন বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিমুদ্দিনে গিয়ে আলোচনা করার কথা বলছেন। তাঁর আগে ওঁকে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অনুমতি নিতে হবে। কারণ উনি তো তৃণমূলীদের বামপন্থীদের সঙ্গে কথা বলা, একসঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার জন্য ফতোয়া দিয়েছিলেন।” এ দিন সমাবেশে প্রাক্তন তিনমন্ত্রী দীনেশ ডাকুয়া, অনন্ত রায়, পরেশ অধিকারী উপস্থিত ছিলেন। |