দিনে রিকশা চালকের বেশে এক গলি থেকে আরেক গলিতে ঘুরে বেড়াত তবিজ, মঞ্ছুররা। আর সন্ধ্যা হলেই চুরির ছক কষত তারা। পরিকল্পনা পাকাপাকি হতেই ডাক পড়ত নারায়ণের। গ্রিলের তালা ভাঙায় পারদর্শী নারায়ণ। চুরির কাজ শেষ হলেই নির্দিষ্ট স্থানে জিনিসপত্র রেখে আবার রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়ত তারা। নিউ জলপাইগুড়ি পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় গ্রিল কেটে একটি মোটরবাইক চুরির ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরেই তারা যে রিকাশা চালানোর আড়ালে একাধিক চুরিতে জড়িত তা জানতে পারে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে একটি চুরির বাইক উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি পাম্পসেট, একটি টেলিভিশনও উদ্ধার করা হয়। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ সুপার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ধৃতদের কাছ থেকে একটি মোরবাইক উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি এনজেপি এলাকার একটি বাড়িতে গ্রিল কেটে চুরি করেছিল তারা। আরও বেশ কয়েকটি চুরির সঙ্গে তারা যুক্ত রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করছি আরও কিছু তথ্য আমরা হাতে পেয়ে যাব।” পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে চোপড়া থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির সাদা পোশাকের পুলিশ। ধৃতদের নাম নারায়ণ বৈরাগী, বিশ্বনাথ বর্মন, তবিজ মহম্মদ, মঞ্ছুর আলি সহ পাঁচজন। নারায়ণের বাড়ি চোপড়ায়। বাকিদের বাড়ি উত্তর দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি জেলা এলাকায়। পুলিশের দাবি, ধৃতরা সপ্তাখানেক আগে এনজেপি এলাকার মন্টু রায়ের বাড়ির বারান্দার গ্রিল কেটে একটি মোটরবাইক চুরি করে। নারায়ণ সেটিকে চোপড়ায় নিজের কাছে রেখেছিল। পুলিশ ওই খবর জানতে পারে। নারায়ণ আরও চুরির ঘটনায় জড়িত বলেও পুলিশের কাছে আগাম খবর ছিল। ওই দিন রাতে অভিযান চালিয়ে একটি বাইক উদ্ধার করে পুলিশ। ধৃতদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। পুলিশ জানতে পেরেছে, এনজেপি এলাকায় আরও একটি বাইক চুরির ঘটনার সঙ্গে ধৃতরা জড়িত রয়েছে। সেটিও গ্রিলের তালা ভেঙে চুরি করা হয়। ওই বাইকটি পুলিশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি। শুধু, বাইক নয়, পুলিশের দাবি, গত ছয় মাসে এনজেপি এলাকায় বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে। সেগুলির সঙ্গেও ধৃতরা জড়িত রয়েছে। তবিজ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, রিকশা নিয়ে তারা ঘুরে বেড়াত। সে সময়ই কোন বাড়িতে গ্রিলের ভিতরে কি জিনিস রাখা হয় তা লক্ষ করত তারা। চুরি করে সেখান থেকে পালানো সম্ভব কি না বা কোন রাস্তা ধরে পালিয়ে যাওয়া যাবে সব দেখে আসত তারা। রাতে ডাক পড়ত গ্রিলের তালা ভাঙা ও চুরির কাজে সিদ্ধহন্ত নারায়ণের। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ওই দলটির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” |