নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রবল জনমতের চাপে মন্ত্রী হস্তক্ষেপ করায় শেষ পর্যন্ত নিজেরাই অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে বাধ্য হলেন একটি নির্মাতা সংস্থা। বুধবার শিলিগুড়ির দুই মাইল এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর একাংশে ওই অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করে তারা। শহরে একের পর এক অবৈধ নির্মাণ নিয়ে সম্প্রতি হইচই শুরু হয় রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তো বটেই, কংগ্রেস তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের একাংশও অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। বিজেপি, নকশালদের (সিপিআইএমএল-লিবারেশন) মতো বিভিন্ন দলগুলিও অবৈধ নির্মাণের রমরমার পিছনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তোলে। সোমবার অভিযোগ পেয়েই দুই মাইলের ওই নির্মীয়মাণ রেঁস্তোরা ভবনের বেআইনি অংশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান মন্ত্রীর কাছে ৩ দিন সময় চেয়ে নেন। বুধবারই ওই সময় সীমার শেষ দিন ছিল। পাশাপাশি, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শহরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে অভিযানে নামতে চলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। রেস্তোরাঁর মালিকপক্ষের তরফে রাজেন্দ্র জালান বলেন, “ভবনের যে অংশ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল ইতিমধ্যে পুরসভার নির্দেশে তা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। পুরসভায় থেকে নকশা অনুমোদন করেই কাজ করা হয়েছে। দমকল-সহ সমস্ত বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়েই রেস্তেরাঁঁ চালু করব। কোনও বেআইনি কাজ করব না।” রেস্তোরাঁ লাগোয়া বাড়ি প্রতাপ কেডিয়ার। তিনি বলেন, “মন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত। শেষ পর্যন্ত অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। আশা করছি অবৈধ নির্মাণের পুরোটাই তারা ভেঙে দেবেন।” পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা এ দিন বলেন, “অবৈধ নির্মাণ নিয়ে যাঁরা এখন সরব হচ্ছেন, তা ৩৪ বছর আগে থেকে করলে ভাল হত। তা হলে শহরের হাল এমন হত না। যাই হোক আমরা শীঘ্রই অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযানে নামব।” পাশাপাশি প্রতাপবাবুর অভিযোগ, ওই রেঁস্তোরার মালিকপক্ষ ভবনের ‘বেসমেন্ট’-এ বেআইনি ভাবে রান্নাঘর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। যদিও রেঁস্তোরা মালিকপক্ষ জানান, আইন মেনেই সমস্ত কাজ করা হবে। দমকলের উত্তরবঙ্গের ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরপ্রসাদ ঘোষ বলেন, “ওই ভবনে রেস্তোরাঁ চালুর জন্য দমকলের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, সেবক রোড, বিধান রোড, মহানন্দাপাড়া, হাকিমপাড়া, আশ্রমপাড়া, শক্তিগড় সহ কয়েকটি এলাকায় একাধিক নির্মাণের ক্ষেত্রে অভিযোগ আছে। মন্ত্রী হস্তক্ষেপ করায় একটি বেআইনি ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। ১১টি বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করে পুরসভা নির্মাতা সংস্থাগুলির কৈফিয়ৎ তলব করেছে। শেষ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই কঠোর মনোভাব দেখানো হবে কি না তা নিয়েই শহরে চলছে নানা জল্পনা। |