পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই সিপিএমের এক উপপ্রধানকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রদীপ ঘোষ নামে ওই ব্যক্তি ইন্দাস ব্লকের দীঘলগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে দীঘলগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের শুভ্রা মজুমদারের কাছে তিনি উপপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফাপত্র জমা দেন। সে দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শারীরিক সমস্যার কারণে ইস্তফা দিচ্ছেন বলে লিখিতভাবে প্রদীপবাবু জানালেও সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের চাপেই তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। পুলিশের দাবি, স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর ও অপহরণের পুরান একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে বুধবার বিষ্ণুপুর আদালত তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। ইন্দাসের বিডিও পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দীঘলগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে শুনেছি। তবে তাঁর পদত্যাগপত্র এখনও আমার কাছে আসেনি। পদত্যাগপত্র পাওয়ার পরে তাঁকে শুনানির জন্য ডাকা হবে।”
দীঘলগ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ১৩। সব সদস্যই সিপিএমের। পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই প্রদীপবাবু পঞ্চায়েত অফিসে আসছিলেন না। মঙ্গলবার তিনি পঞ্চায়েত অফিসে এলে স্থানীয় কিছু বসিন্দা তাঁকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ জানান। এরপরেই তিনি ইস্তফাপত্র লিখে অফিসে জমা দিয়ে চলে যান। শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তিনি ইস্তফা দিলেন বলে উল্লেখ করেছেন।” সিপিএমের ইন্দাস জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম দাসের অভিযোগ, “তৃণমূলের হুমকিতেই দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েত অফিসে যেতে পারেননি প্রদীপ। মঙ্গলবার পঞ্চায়েতে যাওয়ার পরে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জোর করে তাঁকে আটকে রেখে চূড়ান্তভাবে হেনস্থা করে। ওঁদের চাপেই প্রদীপ ইস্তফা পত্র লিখতে বাধ্য হন। তারপর থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ওকে গ্রেফতার করে। অথচ, একাধিক মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা থানার চৌহদ্দির মধ্যে ঘোরাঘুরি করলেও পুলিশ তাঁদের ধরছে না।”
তৃণমূলের ইন্দাস ব্লক সভাপতি তথা বিধায়ক গুরুপদ মেটের দাবি, “পঞ্চায়েতের নানা কাজে বহু দুর্নীতিতে যুক্ত প্রদীপ ঘোষ। আমাদের দলের এক কর্মীকে মারধর ও অপহরণের ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি। আমাদের দলের কেউ তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়নি। আইনমাফিক পুলিশ তাঁকে ধরেছে।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “রাজনৈতিক রঙ দেখে নয়। প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করে অভিযুক্তদের ধরা হচ্ছে। যাদের নামে নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের অবশ্যই ধরা হবে।” অন্য দিকে, ইন্দাসের বাথানিয়া গ্রামে সম্প্রতি দুই সিপিএম কর্মীর জমি থেকে ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগে ওই গ্রামেরই ৪ জন তৃণমূল কর্মীকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার বিষ্ণুপুর আদালত তাঁদের জামিনের আবেদনও মঞ্জুর করে। |