টিভির পর্দায় মোটা ফ্রেমের চশমা পরা তাঁর গম্ভীর মুখ ভেসে উঠতেই উল্লাসে ফেটে পড়ল নবদ্বীপ। তখন বুধবার দুপুর ১টা ৪০মিনিট। মন্ত্রগুপ্তির কোনও শপথ বাক্য পাঠের কোনও কথা অবশ্য শোনা গেল না সমবেত জয়ধ্বনি ও ক্লাব ব্যান্ডের আওয়াজে। স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরে এই প্রথম নবদ্বীপ থেকে কেউ মন্ত্রী হলেন। স্বভাবতই এ দিন দুপুরে রাজভবনে রাজ্য মন্ত্রীসভায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দফতরের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা শপথ নেওয়ায় আবেগ বাঁধ মানেনি। কিছু দিন ধরেই নবদ্বীপ জুড়ে চলছিল চাপা গুঞ্জন। তবে কি এবার নন্দদা! শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিকেল সেই খুশির বার্তা আসে। তখনই শুরু হয়ে যায় উৎসব পালনের প্রস্তুতি। মঙ্গলবার রাত থেকেই শহরের প্রতিটি বাতিস্তম্ভ ঢাকা পড়ে যায় দলীয় পতাকায়। এ দিন সকাল থেকেই শহরের প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে ভিড় জমতে থাকে কর্মী-সমর্থকদের। নন্দদার নিজের পাড়া বড়াল ঘাটের দলীয় কার্যালয়ে ভিড় জমান কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক। শপথ গ্রহণ শেষ হতেই সবুজ আবিরে-আবিরে যেন দোলের সকাল! দলীয় কার্যালয়গুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে তখন মিষ্টি বিতরণ। পথচারী থেকে চেনা মুখ দেখলেই মিষ্টিমুখ না করে ছাড়ছেন না দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। খুশির মহল নন্দদার বাড়িতেও। বড়াল ঘাট লাগোয়া দোতলা বাড়িও যেন আজ অচেনা ঠেকছে সাধারণের কাছে। আজ থেকে যে এই বাড়ি মন্ত্রীর আবাস। ঘরের ভেতরে তখন সকলেই টিভির সামনে। ভাই মন্ত্রী হচ্ছেন শুনে কান্না চেপে রাখতে পারেননি দিদি মাধবী সাহা। অবিবাহিত নন্দদার অভিভাবক ওই অবিবাহিত দিদি-ই। তিনি বলেন, “ভাইয়ের এই সাফল্যে কোন দিদি চোখের জল ধরে রাখতে পারে! আজ বেশি করে মনে পড়তে বাবা-মায়ের কথা।” যদিও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান চলাকালীন নবদ্বীপের এক বড় অংশে বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে ‘কাছের মানুষের’ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান যেমন দেখতে পাননি নবদ্বীপের এক বড় অংশের মানুষ। ভাইয়ের শপথগ্রহণ দেখা থেকেও বঞ্চিত হন মাধবীদেবী ও পরিবারের সদস্যরা। তা নিয়ে আক্ষেপ রয়েই গেল! |