|
|
|
|
আলোয় ভাসছে সদর শহর |
সংখ্যায় বাড়ছে সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে উৎসব মুখর মেদিনীপুর শহর সেজে উঠছে আলোয়। সিপাইবাজার থেকে মিরবাজার, বক্সীবাজার থেকে গোলকুঁয়াচক- সর্বত্রই নানা রঙের আলোর কারসাজি। আজ, বৃহস্পতিবার বেশির ভাগ পুজোর উদ্বোধন। ফলে, বুধবার দিনভর পুজো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন শিল্পীদের পাশাপাশি পুজো উদ্যোক্তারাও।
কালীপুজোয় বরাবরই শহর মেদিনীপুরকে জৌসুলে টেক্কা দেয় রেলশহর খড়্গপুর। জগদ্ধাত্রী পুজোর ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো ছবি। খড়্গপুরকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে থাকে মেদিনীপুরই। আগের থেকে সদর শহরে এখন সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। দর্শকদের নজর কাড়তে আয়োজনে খামতি রাখতে চান না কেউই। তাই কোথাও পুরো এলাকা জুড়ে থাকে চন্দননগরের আলো। কোথাও বা মণ্ডপের আশপাশের নানা রকমের গাছে এক অন্য রকম পরিবেশের ছোঁয়া। শহরের বিবিগঞ্জ সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর এ বার ২০ তম বর্ষ। ইতিমধ্যে এই এলাকা নানা রঙের আলোয় সেজে উঠেছে। পুজো উপলক্ষে বুধবার দেহ সৌষ্ঠব প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তথা এলাকার কাউন্সিলর শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই পুজো শহরের মানুষের। পুজো দেখতে প্রচুর মানুষ আসেন। এটাই প্রাপ্তি।” ২০০৮ সাল থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে বক্সীবাজারে। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা এলাকার কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাণ্ডব। প্রথা মেনে এখানে কুমারী পুজো হয়। দশমীর দিন কুমারীকে নিয়ে একটি শোভাযাত্রা এলাকা পরিক্রমা করে। বিশ্বনাথবাবু বলেন, “সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকেও যতটা করা সম্ভব, আমরা ততটা করার চেষ্টা করি।” মহাতাবপুর দক্ষিণপাড়ায় নিউ দিশাহারা ক্লাবের উদ্যোগে এই বারই প্রথম পুজো হচ্ছে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জয় সিংহ জানান, পুজো উপলক্ষে বস্ত্র বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।” কর্নেলগোলার নবীন- প্রবীণ ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজোর এ বার ১০ তম বর্ষ। ইতিমধ্যে পুজো মণ্ডপের আশপাশের এলাকা আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে আলোর তোরণ।
সিপাইবাজার গির্জাপাড়া এলাকায় খ্রিস্টান-হিন্দু-মহামেডান অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে পুজো হয়। বুধবার উদ্বোধন হওয়া এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুর। পুজো ঘিরে উৎসাহ রয়েছে অলিগঞ্জেও। এখানে পুজো উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় যোগ দেন পাড়ার শিশুরা। ফলে তৈরি হয়এক অন্য আবহ। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা দীপক সাউ বলেন, “পুজো ঘিরে এলাকার সকলে এক জায়গায় মিলিত হন। আনন্দ করেন। এটাই ভালো লাগে।” পাহাড়ীপুরের কিশোর সঙ্ঘ ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন হয়েছে মঙ্গলবার। জেলা পরিষদ রোডের আবির্ভাব ক্লাবের পুজো ঘিরেও উৎসাহ রয়েছে। বুধবার দিনভর পুজোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থেকেছেন উদ্যোক্তারা। দরিদ্র মানুষের প্রতি আত্মত্যাগ, সুস্থ সংস্কৃতির জন্য আত্মচেতনা এবং সেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগই এই পুজোর উদ্দেশ্য। খড়্গপুরের ইন্দার নিশান ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন আজ, বৃহস্পতিবার। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে গুহার আদলে। প্রতিমা সাবেক। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা দীপঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “এলাকার সকলে সহযোগিতা করেন।”
পিংলার জামনার অভিনন্দন ক্লাবের উদ্যোগেও জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। এ বার ১৮ তম বর্ষ। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি এই মণ্ডপের প্রতিমা ঝিনুকের। আজ এই পুজোর উদ্বোধন। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা শৈলেন মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুজো উপলক্ষে পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-যাত্রার আয়োজন করা হয়।” সব মিলিয়ে উৎসবের রেশ কাটতেই চাইছে না। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর পর এ বার জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে শুরু হয়েছে উৎসব। |
|
|
|
|
|