|
|
|
|
বিঁধছে সিপিএমও |
ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তদন্তের জেরে এত মরিয়া মমতা, বলল কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
অনাস্থা প্রস্তাবের প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাটকীয় ভাবে তেড়েফুঁড়ে ওঠার সঙ্গে দুর্নীতি-তদন্তের যোগ দেখছে কংগ্রেস এবং সিপিএম। তাদের বক্তব্য, তৃণমূলের নেতা আর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ও রেলে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়াতেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এতটা মরিয়া হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নেত্রী।
|
আঙুল কে ডি
সিংহের দিকে |
তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ কে ডি সিংহের মালিকানাধীন সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্র। এসএফআইও (সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস)-কে এই তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। আবার পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন চিট ফান্ড সংস্থাগুলির কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত করছে সেবি। অন্য দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের আমলে রেল মন্ত্রকের হিসেবনিকেশ খতিয়ে দেখছে সিএজি। কেন্দ্রীয় সরকারের এই ত্রিফলা চাপেই মমতা এমন মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতাদের বিশ্লেষণ। তাঁদের বক্তব্য, দুর্নীতি-তদন্ত থেকে আত্মরক্ষার জন্য আক্রমণকেই সেরা উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন মমতা। কেন্দ্রের তদন্ত রিপোর্ট বেরনোর আগেই মনমোহন সরকারকে ফেলে দিতে উদ্যত তিনি।
গত শনিবার মহাকরণ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তাঁকে যেন সিবিআইয়ের ভয় দেখানো না হয়। সিপিএম নেতাদের বক্তব্য, “মমতা তো নিজেই সিবিআই তদন্তের কথা বলেছেন। দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসবে, এই আশঙ্কাতেই তিনি অনাস্থা প্রকাশ করতে চাইছেন।” কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি বলেন, “আগে ধারণা ছিল মা-মাটি-মানুষের সরকারের সঙ্গে দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু রেল ও জাহাজ মন্ত্রকে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও কলকাতা-হলদিয়া বন্দরের কী অবস্থা, দেখতে পাচ্ছি। কে ডি সিংহের বিরুদ্ধে যে তদন্ত হচ্ছে, তা জনসমক্ষে এসে গিয়েছে। এই সব ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন। সব কিছুর পিছনেই পরিকল্পনা রয়েছে।” এমনকী, রাজ্যে কংগ্রেস যাতে সিপিএমের বদলে প্রধান বিরোধী দল হতে না পারে, সেই জন্যই তাঁদের দুই বিধায়ককে তৃণমূল ভাঙিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন দীপা।
কোন কোন তদন্তের কথা বলছেন কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতারা?
সাংসদ কে ডি সিংহের বিরুদ্ধে তদন্ত তার অন্যতম। তাঁর মালিকানাধীন দু’টি সংস্থা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সেবি-র নিয়ম না মেনে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলেছে বলে কর্পোরেট মন্ত্রক অভিযোগ পেয়েছে। কে ডি সিংহের তরফে অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু চিট ফান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে সেবি তাদের কাছে নোটিস পাঠিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জনগণের কাছ থেকে এক কথা বলে টাকা তুলে তা অন্য ব্যবসায় ও সংবাদমাধ্যমে খাটানো হচ্ছে। সংস্থাগুলি এমন ভাবে সরকারের ঘরে নাম নথিভুক্ত করছে, যাতে আর্থিক লেনদেনের উপর সরকারি কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকে। পূর্ব ভারতে পশ্চিমবঙ্গেই এই ধরনের চিট ফান্ডের সংখ্যা সব থেকে বেশি। সেবি-র থেকে নোটিস পেয়ে এই সংস্থাগুলি এখন বাড়তি সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছে।
রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, মমতার আমলে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের হিসেবনিকেশ শুরু করেছে সিএজি। এর মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যে রেল কারখানার মতো বড় প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয় সামনে এসেছে। এ ছাড়া এই মন্ত্রকে তৃণমূল আমলের বেশ কিছু নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে রেল ভবনের অন্দরে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেগুলিও।
রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “কোথাও যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে, তা হলে অভিযোগ এলে তদন্ত হবেই। কোনও রাজনৈতিক চাপ মেনে নেওয়া হবে না।” |
|
|
|
|
|