|
|
|
|
ক্ষতি পূরণ হবে না জেনেও স্বস্তিতে নিহতের পরিজনেরা |
সংবাদসংস্থা • মুম্বই |
সঙ্গে অস্ত্র ছিল না। তা-ও পিছু হটেননি। তাঁর চেষ্টাতেই ধরা পড়েছিল ২৬/১১-র এক মাত্র জীবিত জঙ্গি আজমল কসাব। তিনি তুকারাম ওম্বলে। মুম্বই পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর। আজ, কসাবের ফাঁসির দিনে মুম্বই পুলিশের এই অখ্যাত সাব-ইনস্পেক্টর তামাম ভারতবাসীর চোখের মণি।
দাদার অসহায় মৃত্যু এখনও কুরে কুরে খায় ভাই একনাথকে। জঙ্গি হানার খবর পেয়ে গিরগাম চৌপট্টিতে
|
|
অভিষেক বচ্চন
আজ যাঁকে আমাদের শ্রদ্ধা
জানানো উচিত , তিনি মুম্বই
পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব
ইনস্পেক্টর তুকারাম ওম্বলে। |
গিয়েছিলেন তুকারাম। নিরস্ত্র তুকারামের দেহ এ ফোঁড়-ও ফোঁড় করে দিয়েছিল একে-৪৭। কসাবের ফাঁসিতে অবশেষে দাদাকে হারানোর ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়ল, জানান একনাথ। তাও ক্ষোভ যেন আর বাগ মানে না। “আইনে নেই জানি, কিন্তু এতজনকে যে খুন করল, তাকে সক্কলের সামনে ফাঁসিতে চড়ানো উচিত”রাগ উগরে দিলেন তিনি।
স্বামীকে হারানোর শোকের সঙ্গে তুলনা হয় না কিছুরই। তবুও কসাবের ফাঁসি স্বস্তি দিয়েছে ২৬/১১-য় নিহত ‘এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট’ বিজয় সালাসকারের স্ত্রী স্মিতাকে। শাস্তি দেরিতে হওয়ার আক্ষেপ থাকলেও, তাঁর মতে, ভারত যে সন্ত্রাসবাদ সহ্য করবে না, সেই বার্তা দেওয়া গিয়েছে। এই খবরটার জন্যই দিন গুনছিলাম, জানাল বিজয়-স্মিতার মেয়ে দিব্যা।
সালাসকারের সঙ্গেই সে দিন কামা হাসপাতালে গিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অশোক কামটে ও সন্ত্রাস দমন শাখার প্রধান হেমন্ত কারকারে। শেষমেশ যে গোপনীয়তার সঙ্গে ফাঁসি কার্যকর করা গিয়েছে, তাতে খুশি কামটের পরিবার। তবে হেমন্তের স্ত্রী কবিতার দাবি, মুম্বই হামলার অন্য চক্রীদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। কসাবের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাতে চান নিহত টিকিট কালেক্টর এস কে শর্মার স্ত্রী রাগিণী। |
জশন
কসাবের ফাঁসির খবর শুনে উৎসব মেরঠে। ছবি: পিটিআই |
কসাবকে নিয়ে স্বস্তির মধ্যেও অন্য আশঙ্কা দানা বাঁধছে ইসরোর প্রাক্তন অফিসার উন্নিকৃষ্ণনের মনে। ২৬/১১ প্রাণ কেড়েছে তাঁর ছেলের। তাঁর কথায়, আজকের শাস্তি সন্ত্রাস দমনের এক অধ্যায়। কসাব ছাড়া এই হামলার অন্য মাথারা দিব্যি এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। সন্ত্রাসের গোড়ায় যে ঘৃণা, তাতে মদত দিয়ে চলেছে পাকিস্তান।
আজ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে আরও একটি পরিবার। সিএসটি স্টেশন থেকে রওনা হয়েছিলেন ফুলচন্দ বিন্দি। জানতেন না তাঁরই ট্যাক্সিতে বোঝাই করা রয়েছে বিস্ফোরক। এক মাত্র উপার্জনকারীকে খুইয়ে ইলাদাবাদে এই বাড়ির প্রাণটাই যেন হারিয়ে গিয়েছিল এক লহমায়। চার বছরের চেনা ছবিটা আজ একটু হলেও বদলেছে। অপরাধীর যোগ্য শাস্তিতে চোখের জল বাঁধ মানছে না ফুলচন্দের স্ত্রীর।
এক রাতের বিভীষিকা এক সঙ্গে কেড়ে নিয়েছিল এতগুলো মুখের হাসি। চার বছরের চেনা দিন-যাপন আজ যেন থমকালো এক মুহূর্তের জন্য। কসাবের ফাঁসি স্বস্তি দিল প্রিয়জনদের। কিন্তু আর কতটা পথ পেরোলে সন্ত্রাসবাদ ফিরে আসবে না কখনও, উত্তর খুঁজে চলেছেন তাঁরা।
|
কসাব কাহিনি |
২০০৮ |
২৬ নভেম্বর কসাব-সহ ১০ জঙ্গির হানা মুম্বইয়ে |
২৭ নভেম্বর রাত দেড়টায় ধরা পড়ল কসাব, নায়ার হাসপাতালে ভর্তি |
৩০ নভেম্বর পুলিশের কাছে কসাবের স্বীকারোক্তি |
২০০৯ |
১৬ জানুয়ারি কসাবকে আর্থার রোড জেলে রাখার সিদ্ধান্ত |
২৫ ফেব্রুয়ারি কসাবের বিরুদ্ধে চার্জশিট |
১৭ এপ্রিল কোর্টে শোনানো হল স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি প্রত্যাহার কসাবের |
১৮ ডিসেম্বর সব অভিযোগ অস্বীকার কসাবের |
২০১০ |
৬ মে দায়রা আদালতে কসাবের ফাঁসির নির্দেশ |
২১ ফেব্রুয়ারি বম্বে হাইকোর্টেও সেই রায় বহাল |
১০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ। কসাবের দাবি, তাকে রোবটের
মতো চালনা করে ওই জঘন্য অপরাধ করানো হয়েছিল।
তার কম বয়স, তাই ফাঁসি মকুব করা হোক |
২০১২ |
২৯ অগস্ট ফাঁসি বহাল সুপ্রিম কোর্টে |
২১ নভেম্বর ইয়েরওয়াডা জেলে ফাঁসি |
|
|
|
|
|
|