বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের রেশ না মিটতেই সেই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়ে গেল রাজনীতি। বুধবার সকাল থেকেই বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতা থেকে শুরু করে শাসক দলের নেতারাও ঘটনাস্থলে যান। প্রত্যাশিত ভাবেই বিরোধীরা অভিযোগের আঙুল তোলেন এলাকার তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বস্তি বাঁচাও কমিটির অভিযোগ, পুর-কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই এমন ঘটেছে। পুর-চেয়ারম্যানের অবশ্য দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে।
ইতিমধ্যে মঙ্গলবার মারা যাওয়া শিশুটির পরিচয় জানা গিয়েছে। তার নাম ইমরাজ গায়েন (৪)। নিখোঁজ চার শিশুরও সন্ধান মিলেছে। |
ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার গভীর রাতে রবীন্দ্রনগর থানায় মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বস্তি বাঁচাও কমিটি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “দুলালবাবু-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে।” অন্য দিকে, এ প্রসঙ্গে দুলালবাবুর বক্তব্য, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। কাল সাংবাদিক বৈঠকে যা বলার বলব।” এ দিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ওই বস্তিতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। মঙ্গলবার আগুনে মৃত শিশু ইমরাজের মা সাবিনা বিবি বলেন, “আমি স্থানীয় মাদ্রাসায় ইমাম সাহেবকে খাবার পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম। ঘরে ছেলে ঘুমোচ্ছিল। ফিরে দেখি সব শেষ হয়ে গিয়েছে।”
বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ভস্মীভূত বস্তির গৃহহীনদের সঙ্গে দেখা করেন। সকাল ১০টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনা কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মেহতাব হোসেন ওই বস্তিতে যান। বস্তিবাসীদের কয়েক জন তাঁর সামনে বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী ও দুই প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবং রেজ্জাক মোল্লা ওই বস্তিবাসীদের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্য সরকারের কাছে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থার দাবি করেন রেজ্জাক মোল্লা। পাশাপাশি, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ভস্মীভূত বস্তির বাসিন্দাদের কাছে আবেদন করেন তিনি। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে বিধানসভা পরিষদীয় কমিটির সদস্যেরাও ওই বস্তিতে যান।
সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টও (এআইইউডিএফ) বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের দাবিতে সভা করে।
মঙ্গলবার রাতে গৃহহীনদের চিঁড়ে, চাল ও ডাল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলিপুরের মহকুমাশাসক তনবীর আবজল। মহকুমাশাসক বলেন, “গৃহহীনদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে।” |