দুবরাজপুরের লোবা গ্রামের কৃষিজমি রক্ষা কমিটির বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশি হামলায় আহত গ্রামবাসীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। গত ৬ নভেম্বর লোবায় আন্দোলনকারী গ্রামবাসী ও পুলিশের সংঘর্ষে আহত হন অনেকে। পুলিশের গুলিতে ৫ জন আহত হন বলে অভিযোগ ওঠে।
১৩ নভেম্বর জখম দুই গ্রামবাসী গৌতম ঘোষ ও পূর্ণিমা ডোমকে সিউড়ি সদর হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়। কিন্তু কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সভাপতি ফেলারাম মণ্ডল ও সম্পাদক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “মঙ্গলবার রাতেই গৌতমের পায়ের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও হাসপাতালের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ পেয়ে আমরা বুধবার সকালে বর্ধমানে ছুটে আসি। কিন্তু হাসপাতালের নিউ বিল্ডিংয়ে ভর্তি গৌতমের রক্ত বন্ধ করার কোনও ব্যবস্থা করাতে পারিনি। তাই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বীরভূমের জেলাশাসককে ফোন করে চিকিৎসায় অবহেলার কথা জানিয়েছি।”
হাসপাতাল সুপার অসিতবরণ সামন্তের অবশ্য দাবি, “গৌতমবাবুর অবস্থা উদ্বেগজনক নয়। কিছুটা রক্ত বের হয়েছে ঠিকই, তবে এমন হতেই পারে। আমি ওঁর আত্মীয়দের অভিযোগ পেয়েই ওয়ার্ডে গিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।’’ পূর্ণিমা ডোমের অবস্থা ভাল বলে দাবি হাসপাতাল কর্তপক্ষের।
সম্পর্কে গৌতমবাবুর ভাই, কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সদস্য মোহিত ঘোষের অভিযোগ, “সেদিনের ঘটনার সময় আমার দাদাই সামনে ছিলেন। তাই তাঁর পায়েই প্রথম গুলি লাগে। সিউড়ি হাসপাতাল থেকে বর্ধমানে পাঠানো হয়। তার পর থেকে এখানে পড়ে রয়েছেন। কখনও ওঁর ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ পাল্টানো হচ্ছে, কখনও তা-ও হচ্ছে না। আমাদের সন্দেহ, ওঁর শরীরে এখনও গুলি রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের তরফে সেই ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।”
কৃষিজমি রক্ষা কমিটির লোকেরা এ দিন সুপারের সঙ্গে দেখা করে গৌতমবাবুর চিকিৎসা ঠিকমতো না হওয়ার অভিযোগ তোলেন। কমিটির বক্তব্য, “সুপার বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ব্যাপারে নির্দেশ পেয়েছেন। চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে।” তবে সুপারের দাবি, “ওই দু’জনেরই অবস্থা উন্নতির দিকে। কারও শরীরে গুলি নেই। ওঁদের দরকার হলে ছুটি দিয়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঁরা যাতে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেদিকে লক্ষ রাখছি।” |