উত্তরবঙ্গে শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, পর্যটন এবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে মার্কিন বিনিয়োগে জন্য সহযোগিতা করতে কলকাতার মার্কিন দূতাবাসের কনসাল জেনারেল ডিন আর থম্পসনকে অনুরোধ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে ঘন্টা খানেক মন্ত্রীর সঙ্গে কনসাল জেনারেলের বৈঠক হয়। উত্তরবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানানোর পর মন্ত্রী উত্তরবঙ্গে বিনিয়োগের বিষয়ে সহযোগিতা করার আবেদন করেন। মার্কিন দূতাবাসের ওই প্রতিনিধিও মন্ত্রীকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন।
মন্ত্রী গৌতমবাবু এই দিন বলেন, “রাজ্য সরকারের কাছে উত্তরবঙ্গ কেন এতটা অগ্রাধিকার পাচ্ছে তা উনি বোঝার চেষ্টা করেন। এর আগেও একবার ওঁর আসার কথা ছিল। শারীরিক অসুস্থার জন্য উনি আসতে পারেননি। বিনিয়োগের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উনি এই অঞ্চল লাগোয়া বিভিন্ন দেশের মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাজে লাগিয়ে কী করা যায় তা দেখবেন বলেছেন।” এর পাশাপাশি, মন্ত্রীর বক্তব্য, “কলকাতা গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীরকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেব। ইতিমধ্যে বিষয়গুলি নিয়ে ওঁর সঙ্গে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও কথা হয়েছে। তাই এই নিয়ে আমরা আশাবাদী।” |
সরকারি সূত্রের খবর, চারদিনের সফরে উত্তরবঙ্গে এসেছেন মার্কিন কনসাল জেনারেল। এদিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি ছাত্রছাত্রী সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে মাটিগাড়া এলাকায় একটি সফটওয়ার পার্ক পরিদর্শন করেন। দার্জিলিং পাহাড়ের কলেজগুলিতে তিনি যাবেন বলে আপাতত ঠিক রয়েছে। পাহাড়ে ডিন আর থম্পসন দুই দিন থাকবেন। পাহাড়, সমতল সর্বত্র ঘুরে এই অঞ্চলের বর্তমান অবস্থা তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে বোঝার চেষ্টা করছেন মার্কিন সরকারের ওই প্রতিনিধি। আগামী দিনে ফের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে কনসাল জেনারেল শুধু জানিয়েছেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকে পরিকাঠামোর বিষয় নিয়ে প্রথমে আলোচনা হয়। সেখানে কোচবিহার, বালুরঘাট বিমানবন্দর চালু চেষ্টা, বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের চেষ্টা, রেল যোগাযোগ এবং সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। নেপাল, ভুটান, চিন এবং বাংলাদেশ সঙ্গে এই অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি বৈঠকে উঠে আসে। তার পরে শিক্ষা ক্ষেত্রের গবেষণা, ওয়ার্কশপ, সেমিনার এবং দুই দেশের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের আদান প্রদান বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম নিয়েও কথা হয়। পাশাপাশি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং পর্যটনের সরকারের এই অঞ্চলের প্রকল্পগুলি নিয়ে আলোচনা হয়। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও কোচবিহারে আরেকটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের গড়ে তোলার বিষয়টি মার্কিন প্রতিনিধিকে জানানো হয়। মন্ত্রী জানান, মার্কিন প্রতিনিধিরা যে এই অঞ্চল নিয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছেন তা বোঝাই যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে দুই দফায় মার্কিন প্রতিনিধিরা উত্তরবঙ্গে আসলেন। আমি বিনিয়োগের বিষয়টি ওঁকে দেখতে বলেছি। ওঁরা শিক্ষা ও তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন তা ওঁদের সফরসূচি থেকেই বোঝা যাচ্ছে। ওই দুই ক্ষেত্রেও যদি বিনিয়োগ আসে তাহলেই তো বড় বিষয়। আমরা উত্তরবঙ্গের উপর তৈরি বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কিত পুস্তিকা কনসাল জেনারেলের হাতে তুলে দিয়েছি। বৈঠকের শেষে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডির লেখা টুকরো টুকরো ঘটনাক্রম সম্বলিত একটি বই মাকির্ন কনসাল জেনারল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর হাতে উপহার হিসাবে তুলে দেন। |