নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নিম্নচাপের চোখরাঙানির মুখে উত্তুরে হাওয়া কিছুটা থমকে গিয়েছিল ঠিকই। তবে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, কাল, বুধবার থেকেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ফের নামবে এবং আস্তে আস্তে ফিরে আসতে থাকবে শীতের আমেজ।
তা হলে কি বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ রাতারাতি দুর্বল হয়ে গেল?
আবহবিদেরা সোমবার জানান, ওই নিম্নচাপ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আজ, মঙ্গলবার রাতের মধ্যে তা স্থলভূমিতে ঢুকে দুর্বল হয়ে যাবে। আর নিম্নচাপের দাপট কমে গেলেই বুধবার সকাল থেকে উত্তর ও মধ্য ভারতের তীব্র উত্তুরে হাওয়া ফের দক্ষিণবঙ্গে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে-ক্ষেত্রে বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে বলে মনে করছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “নিম্নচাপের প্রভাব পুরোপুরি কাটতে দিন দুয়েক লাগবে। বুধবার শহরে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা আছে।” |
চলতি মরসুমে এক দিনই তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। গত শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৯ ডিগ্রি। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে জম্মু-কাশ্মীরের কোথাও বৃষ্টি, কোথাও তুষারপাত চলছিল। সেই বৃষ্টি ও বরফ মাখা উত্তুরে হাওয়া পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ঢুকতে থাকায় শীতের আমেজ ঘনিয়ে উঠছিল। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার ফলে তাপমাত্রা ফের বাড়তে শুরু করে।
বুধবার আবার শীতের আমেজ মিলবে বলে আবহাওয়া দফতর আশ্বাস দিলেও সোমবারের বিকেলের আকাশ দেখে অবশ্য তা মনে হয়নি। এ দিন সকাল থেকেই কলকাতা-সহ সংলগ্ন দক্ষিণবঙ্গের আকাশ ছিল মেঘলা। বেলা যত গড়িয়েছে, মেঘের জটলাও বেড়েছে। এ দিন শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি বেশি। আলিপুরের আবহবিদেরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ওই নিম্নচাপের প্রভাবেই শীত-শীত ভাবটা উধাও হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের আকাশে মেঘের আনাগোনা একই কারণে। কয়েক সপ্তাহ আগে ঘূর্ণিঝড় নীলমের প্রভাবেও এমনটা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাবে সেই সময় বৃষ্টিও হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। এ দিন অবশ্য তেমন কোনও আভাস দেননি আবহবিদেরা।
রবিবার নিম্নচাপটি ছিল ওড়িশার পারাদীপ প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে। আর সোমবার উপগ্রহ-চিত্রে দেখা যায়, নিম্নচাপটি বিশাখাপত্তনম থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। সেটি স্থলভূমিতে ঢুকলেই শক্তি হারিয়ে ফেলবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, নিম্নচাপটি অন্ধ্রের উপকূলের দিকে এগোনোর ফলে সেখানে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। তাই মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে অন্ধ্র-তামিলনাড়ুতে বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। |