সমন্বয়ের অভাবে সুযোগ হারালেন জিমন্যাস্টরা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সরকারি দফতরের মধ্যে সমন্বয়ে জোর দেওয়ার চেষ্টা করলেও কার্যক্ষেত্রে তা যে হচ্ছে না, তার সাক্ষী রইল পুরুলিয়া। রাজ্য ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতর এবং স্কুল শিক্ষা দফতরের সমন্বয়ের অভাবে একই দিনে রাজ্য স্তরের জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতার আসর বসল পুরুলিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরে। ফলে প্রতিযোগীর অভাবে পুরুলিয়ায় পাইকার (পঞ্চায়েত যুব ক্রীড়া অউর খেল অভিযান প্রকল্প) দু’দিনের রাজ্য স্তরের জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতা শুক্রবার উদ্বোধনের দিনেই শেষ করে দিতে হল। রাজ্য ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতর এবং শ্যামনগরে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল ফর স্কুল গেমস অ্যান্ড স্পোটর্স-এর (রাজ্য স্কুল ক্রীড়া সংসদ) সমন্বয়ের অভাবেই যে প্রতিযোগীরা বঞ্চিত হলেন, কর্মকর্তারা তা স্বীকারও করে নিয়েছেন। রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “দু’টি দফতরের মধ্যে এমন সমন্বয়ের অভাব হওয়ার কথা নয়। কেন এমন হল তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”
কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক এবং রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতর যৌথ ভাবে শুক্রবার থেকে পুরুলিয়া শহরে পাইকার রাজ্যস্তরের ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। উদ্যোক্তারা জানান, ১০টি বিভাগে ৪১৮ জন প্রতিযোগীর যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান, হুগলি ও পুরুলিয়া থেকে মাত্র ৫২ জন প্রতিযোগী এসেছিলেন। ফলে দুপুর গড়ানোর পরেই প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যায়। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার কথা ছিল শনিবার। পাইকার এই প্রতিযোগিতার ডিরেক্টর নুরউদ্দিন হালদার বলেন, “একই দিনে দু’টি জায়গায় রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা হওয়ার জন্যই পুরুলিয়ায় প্রতিযোগী অনেক কম এসেছিলেন। তাই তাড়াতাড়ি শেষ করে দিতে হল।” তিনি আবার রাজ্য স্কুল জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতার পর্যবেক্ষকও। তাঁর কথায়, “সপ্তাহ দু’য়েক আগেই জানতে পারি পুরুলিয়ায় পাইকার ওই প্রতিযোগিতা হচ্ছে। কিন্তু ওই একই দিনে যে রাজ্য স্কুল জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতা হচ্ছে, তা দিন কয়েক আগে জানানো হয়।” তাঁর দাবি, তড়িঘড়ি রাজ্য স্কুল ক্রীড়া সংসদ দিন-ক্ষণ ঠিক করাতেই এই সমস্যা।”
রাজ্য ক্রীড়া দফতরের পক্ষ থেকে পাইকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাথলিট সোমা বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য স্কুল ক্রীড়া সংসদ প্রতিযোগিতার দিনক্ষণ আগাম জানালে এই সমস্যা এড়ানো যেত।” রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদের সহকারী সম্পাদক তমাল দাসেরও দাবি, “পুরুলিয়ায় ওই প্রতিযোগিতা নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে রাজ্য স্কুল ক্রীড়া সংসদের প্রতিনিধিও ছিলেন। কিন্তু সেদিন তিনি প্রতিযোগিতার দিন নিয়ে আপত্তি জানালে আমরা অন্য দিনে পাইকার প্রতিযোগিতা ঠিক করতাম।” রাজ্য স্কুল ক্রীড়া সংসদের সম্পাদক সমীরণ দাসের পাল্টা দাবি, “পুরুলিয়ায় প্রতিযোগিতা করার আগে পাইকা যোগাযোগ করেনি। সমন্বয়ের অভাবেই এই গোলমাল হয়েছে।” তাঁর দাবি, সমন্বয় রক্ষার দায় শুধু তাঁদেরই নয়, পাইকারও।ক্রীড়া-কর্তাদের এই চাপানউতোরে আখেরে সুযোগ হারালেন বহু জিমন্যাস্ট। তাঁদের অভিযোগ, “ওঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দিনক্ষণ ঠিক করলে আমাদের সুযোগ হারাতে হত না।” বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “জিমন্যাস্টদের এ ভাবে বঞ্চিত করার ঘটনা মোটেই কাম্য নয়। ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য সবার সতর্ক থাকা দরকার।” কেন্দ্রীয় সরকারের স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র (সাই) তরফে পুরুলিয়ায় পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিমাই কাঞ্জি। তিনি বলেন, “পাইকার এই প্রতিযোগিতায় সমন্বয়ের অভাব বা প্রচারের ঘাটতি ছিল কি না তা দেখা দরকার। আঞ্চলিক অধিকর্তাকে এ নিয়ে রিপোর্ট দেব।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.