আজ যুবভারতীর গ্যালারি থেকে নির্দেশ পাঠাবেন করিম
বাগানে ঢুকেই ওডাফা-টোলগে জুটি সামলাতে নেমে পড়লেন
দু’বছর নয় মাস পর সবুজ-মেরুনে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে দিলেন করিম বেঞ্চারিফা। বলে দিলেন, মোহনবাগানকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন এবং ওডাফা ওকোলিকে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসাবে দেখতে চান তিনি!
দেশের সবথেকে দামি কোচ হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে পাঁচ নম্বরে থাকা মোহনবাগানকে ভারতসেরা করার কথা বলবেন করিম, তাতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিন্তু মরোক্কান কোচ বাগানে তাঁর ‘দ্বিতীয় ইনিংস’ শুরুর দিনে যে ভাবে প্রকাশ্যে ওডাফা-বন্দনায় মুখর হলেন তা নজিরবিহীন। “ওডাফা ভারতীয় ফুটবলে মহাতারকা। অসাধারণ ওর গোল করার দক্ষতা। আমি জানি এখন যে সর্বোচ্চ গোলদাতা তার চেয়ে ও পিছিয়ে আছে। কিন্তু চাই ওডাফা গোল করে সবার উপরে থাকুক। আমি ওর সঙ্গে ফের কাজ করব এটা ভেবে ভাল লাগছে।”
মোহনবাগান করিমকে দায়িত্ব দেওয়ার পর চারিদিকে ফিসফাস ছিল, ওডাফার সঙ্গে নতুন কোচের রসায়নটা কেমন হবে। চতুর করিমের কানেও সেটা পৌঁছেছে। এবং সে জন্যই সম্ভবত মোহন-অধিনায়কের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে চার্চিলে তৈরি হওয়া তাঁর বহু চর্চিত দূরত্ব কমাতে মোহন কোচের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে, “ওডাফার সঙ্গে যদি কিছু হয়ে থাকে সেটা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টুকরো মনোমালিন্যের মতো ব্যাপার। সব সংসারেই এটা হয়। ২০০৯-এ ওডাফাকে মোহনবাগানে সই করানোর জন্য আমিই কিন্তু ক্লাব কর্তাদের বলেছিলাম।”
করিম যখন সোমবার অনুশীলনের পর নবি-নির্মলদের সঙ্গে কথা বলেন তখন সেখানে ছিলেন না ওডাফা। স্ত্রী-র অসুস্থতার জন্য আসতে পারেননি মাঠে। তাঁকে নিয়ে করিমের ‘উচ্ছ্বাস’ সম্পর্কে ফোনে প্রশ্ন করলে ওডাফা বলে দেন, “আমি রাত জেগে ক্লান্ত। যা বলার কাল বলব।”
বাগান তাঁবুতে করিম। —নিজস্ব চিত্র।
ক্লাবের সঙ্গে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ করে যে গোল-টেবিলে বসে সাংবাদিক সম্মেলন সেরে বিদায় নিয়েছিলেন, এ দিন সেই টেবিলে বসেই সবুজ-মেরুনে নিজের পুনরাভিষেকের কথা ঘোষণা করলেন করিম। তবে টেবিলটা ২০১০-এ তাঁবুর যে দিকে রাখা ছিল এ দিন ছিল ঠিক তাঁর উলটো দিকে। সেটা যে করিমেরও মনে আছে তা বোঝা যায় যখন তিনি হাসতে হাসতে বলে দেন, “গত বার মাঠের ওই অর্ধে ছিলাম, এ বার এই অর্ধে আছি। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। এখান থেকে বিদায় নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে সালগাওকরে গিয়েছিলাম। গোয়ার ক্লাবকে ফেড কাপ আর আই লিগ দিয়েছি। এ বার আবার একটা বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এলাম।”
আজ মঙ্গলবার কলকাতা লিগে মোহনবাগানের খেলা আছে পোর্ট ট্রাস্টের সঙ্গে। করিম অবশ্য রিজার্ভ বেঞ্চে বসছেন না। থাকবেন গ্যালারিতে। বুধবার অনুশীলন শুরু করবেন তিনি। আই লিগে মুম্বই এফসি-র বিরুদ্ধে পুণেতে ২৫ নভেম্বর বসবেন বেঞ্চে। “সামনেই কঠিন চ্যালেঞ্জ। মুম্বই এফসি, ডেম্পো, পুণে এফসি-র সঙ্গে অ্যাওয়ে ম্যাচের পর কলকাতায় ডার্বি। যে কোনও কোচই উইনিং কম্বিনেশন পেলে খুশি হন। হারা টিমকে দাঁড় করানো কঠিন। আমি ফুটবলারদের বলেছি সালগাওকর ম্যাচের মতো খেলতে পারলেই আমরা জিতব।”
প্রতিবার কোচ বদলের সময় সাধারণত মোহন-তাঁবুতে যে রকম আছড়ে পড়ে জনতা তা অবশ্য এ দিন ছিল না। ফ্যানস্ ক্লাবের কিছু সদস্য ফুলের মালা ও শুভেচ্ছা কার্ড দেন নতুন কোচকে। ট্রেভর মর্গ্যানের দলের নাম মুখে না আনলেও করিম বলে দেন, “লিগ টেবিলের শীর্ষস্থানে থাকা টিমের সঙ্গে আমাদের ফারাক চার পয়েন্টের। এটা মোছা সম্ভব। এখনও লিগ ওপেন।”
গত এক মাস আইনের গেরোয় আটকে ছিলেন সালগাওকরে। কিন্তু করিমের মন যে পড়েছিল মোহনবাগানে তা এ দিন সাংবাদিকদের সামনেই ফাঁস করে দেন অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। বলে দেন, “করিম নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন আমাদের কোচ ও ফুটবলারদের সঙ্গে। করিমের সঙ্গে পরামর্শ করেই আমরা মৃদুলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম।” তখন দেবাশিসের পাশে উপস্থিত এ দিন থেকে সহকারী কোচ হয়ে যাওয়া মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোালকিপার কোচ হেমন্ত ডোরা। যাঁরা এত দিন দাবি করে আসছিলেন, করিমের সঙ্গে টিম নিয়ে তাঁদের কোনও কথা হয়নি। করিম নিজেও বলে দেন, “মৃদুল এবং হেমন্তর সঙ্গে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি।”
মোহনবাগানের নতুন কোচ যে কাজ শুরুর আগেই মঞ্চ তৈরি রেখেছেন সেটা আরও বোঝা যায় যখন করিম বলেন, “টোলগের সঙ্গে আমার মেলে যোগাযোগ আছে। ও রিহ্যাবে আছে। সুস্থ হলেই আসবে।”

মঙ্গলবারে কলকাতা লিগ
মোহনবাগান: পোর্ট ট্রাস্ট
(যুবভারতী, ২-০০)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.