ভারতের কাছে পর্যুদস্ত হয়ে দু’টো জিনিস প্রমাণ করল ইংল্যান্ড। এক, দলের মাত্র তিন ক্রিকেটার ঠিকঠাক খেললে টেস্ট জেতা যায় না। দুই, বিপক্ষ যদি ৫০০-র উপর রান করে ফেলে তা হলে প্রথম ইনিংসেই যতটা সম্ভব ভাল ব্যাটিং করতে হয়। না হলে দ্বিতীয় ইনিংসে যতই ভাল খেল না কেন, ২০০ রানে পিছিয়ে থাকলে আর হাতে আড়াই দিন সময় থাকলে কিচ্ছু করার নেই।
ইংল্যান্ড মানসিক ভাবেই টেস্টটা হেরে বসল। একে তো শুরুতেই ওরা মনে করে নিয়েছিল পিচে যেন মাইন পোঁতা। এদিক-ওদিক করলেই নিশ্চিত বিস্ফোরণ। যা আদতে ছিল না। পিচটা ছিল স্লো-টার্নার। যত ম্যাচ গড়িয়েছে পিচ তত মন্থর হয়েছে। বলও নিচু হয়েছে। এতে ব্যাটসম্যানরা আরও বেশি সময় পায় বল খেলার। কিন্তু ইংরেজদের দেখে বুঝলাম, ওরা ভারতীয় স্পিনারদের বিরুদ্ধে মোটেই আত্মবিশ্বাসী ছিল না। গলদটা ছিল রক্ষণের টেকনিকে। কেউ কেউ এমন শট খেলে আউট হল যাতে তাদের চাপে থাকাটা পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে। যেমন প্রথম ইনিংসে ইয়ান বেল। দ্বিতীয় ইনিংসে পিটারসেন।
|
যখন বল বাঁইবাঁই করে ঘুরছে আর ব্যাটসম্যানের খুব কাছে ওত পেতে আছে চার ফিল্ডার, সেই সময় প্রথম আধ ঘণ্টাই নার্ভের আসল পরীক্ষা। সে ব্যাট ধরে তেন্ডুলকরই দাঁড়াক আর বয়কট! এই পরিস্থিতিতেই দরকার পাথর-কঠিন টেম্পারামেন্ট। এই পিচে কী ভাবে ব্যাট করতে হয় সেটা দেখিয়েছে পূজারা আর কুক। বলের লেংথ দেখো, ডিফেন্স মজবুত রাখো আর হয় এগিয়ে এসে বলটা খেলো স্পিন করার আগেই। না হলে ক্রিজে পিছিয়ে যাও আর বলটা ব্যাটে আসতে দাও। পূজারা এবং কুক এগুলো নির্ভুল ভাবে করে ফলও পেয়েছে। ইংল্যান্ডের বাকি ক্রিকেটারদের মধ্যে সোয়ান আর প্রায়র দারুণ লড়ল। কিন্তু ফল পেল কই! আরও লজ্জা থেকে বাঁচতে ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের জন্য আমার বার্তা একটাই। শট বাছায় সতর্ক থাকতে হবে।
আরও বড় একটা প্রশ্ন হল, পরের টেস্টগুলোর জন্য কি মন্টি পানেসরকে দরকার? আমার উত্তরহ্যাঁ, অবশ্যই দরকার। ওর তো প্রথম টেস্টেই খেলা উচিত ছিল। আমি খুব অবাক হয়েছি কুকরা তিন পেসার খেলানোয়। বিদেশ সফরে দল নির্বাচনের ব্যাপারে আমার নিজস্ব একটা পন্থা আছে। দেখে নিতে হবে, হোম টিম নিজেদের মাঠে কী ভাবে দল সাজাচ্ছে। ঠিক সে ভাবেই নিজেদের দল বাছতে হবে।এরই মধ্যে বেল আবার বাড়ি ফিরছে বাচ্চার জন্মের সময় পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য। একটা-দু’টো বদল এই অবস্থায় করতেই হবে কুকদের। মন্টি যদিও বা খেলে ইংল্যান্ডকে কিন্তু তাদের ব্যাটিংয়ে আরও ধার বাড়াতে হবে। |