সেরা সুখবর, অশ্বিন-ওঝা জুটিতে লুটছে
যে রকম আশা করেছিলাম, আমদাবাদ টেস্টের ফল সে রকমই হল দেখে বেশ ভাল লাগছে। এমএস টস জেতার পর বীরু-গোতির হাতে ভারতের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। তার পর পূজারার দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরি আর খুব ভাল একটা হাফসেঞ্চুরি দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে যুবরাজের প্রত্যাবর্তন।
বোর্ডে নিজেরা বেশি রান তোলার একটা সুবিধে হল, ক্লোজ-ইন ফিল্ডার রেখে বিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করা যায়। বড় রানের পুঁজি নিয়ে বল করার পুরো ফায়দা তুলল অশ্বিন-ওঝা জুটি। দ্বিতীয় ইনিংসে জাক আর উমেশও ওদের ভাল সঙ্গত দিয়েছে। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডকে একেবারে দিশেহারা দেখিয়েছিল। যদিও এই টেস্ট থেকে ওরা ইতিবাচক কিছু নিতে চাইলে ওদের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের ব্যাটিং দেখে ওদের শেখা উচিত।
বিজয়-ধ্বনি। মোতেরায় সোমবার।
গোটা টেস্টেই আমার কুককে দুর্দান্ত লেগেছে। অশ্বিনের ফাঁদে পা দেওয়ার আগে পর্যন্ত প্রথম ইনিংসে ও ভাল ব্যাট করছিল। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তো কুক ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিল। কুকের অন্যতম বড় গুণ হল ওর ধৈর্য। টার্নিং বলের সামনে সফল হতে গেলে যা যা দরকার সেগুলো অনেক ব্যাটসম্যানেরই আছে। কিন্তু শুধু এই মশলাগুলো থাকলেই হয় না। এর সঙ্গে চাই প্রচুর ধৈর্য, নিখুঁত ফুটওয়ার্ক, স্ট্রোক তৈরি করতে না-চাওয়ার শৃঙ্খলা আর বাজে বলগুলো বাউন্ডারির বাইরে পাঠানোর ক্ষমতা। কুকের মধ্যে এগুলো তো দেখলামই, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় ওর মধ্যে বাড়তি আরও কিছু গুণও চোখে পড়ল। টপ অর্ডার থেকে ও আর একটু সাহায্য পেলে হয়তো ভারতকে ভাল চাপে ফেলতে পারত ইংল্যান্ড।
আমার কাছে এই টেস্ট জয়ের বড় প্রাপ্তি হল পূজারা আর ওঝার পারফরম্যান্স। এই দুই তরুণই টেস্ট ক্রিকেটে নতুন। আর দু’জনেই ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ পারফর্ম করে টেস্ট দলে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। প্রথম শ্রেণি আর এজ-গ্রুপ ক্রিকেটে পূজারা প্রচুর রান করেছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই বড় স্কোর। সৌরাষ্ট্রের হয়ে ওর তিনটে ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে। যার মধ্যে একটা রঞ্জি ট্রফিতে। প্রথম শ্রেণি থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে সফল ভাবে উঠতে গেলে খেলার যে খুঁটিনাটি জিনিসগুলো খুব ভাল ভাবে জানা দরকার, পূজারার আয়ত্তে রয়েছে তার সব কিছু।
রাহুল টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে গুরুত্বপূর্ণ তিন নম্বরে খেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পূজারাকে। কী সুন্দর ভাবে তার জবাব দিয়েছে পূজারা! হায়দরাবাদে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ও ভাল একটা সেঞ্চুরি করেছিল। কিন্তু আমদাবাদের ডাবল সেঞ্চুরিকে তার উপরে রাখতেই হবে। কারণ, ইংল্যান্ড বিশ্বের দু’নম্বর টেস্ট দল। আর পূজারার ডাবল সেঞ্চুরি যে ভিতটা গড়ে দিয়েছিল, তার জন্যই কিন্তু বেশ সহজে টেস্ট জিতল ভারত।
আমি নিশ্চিত পূজারা অনেক দূর যাবে। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই ওর সঙ্গে দ্রাবিড়ের তুলনা করা শুরু করে দিয়েছে। সত্যি বলতে কী, তুলনা টানা নিয়ে এই মাতামাতিটা আমার একেবারেই মাথায় ঢোকে না। দেড় যুগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর রাহুল আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে। আসুন, পূজারাকেও আমরা সেই স্বাধীনতাটা দিই। ও নিজেই নিজের জায়গাটা করে নিক। নিজস্ব কীর্তি স্থাপন করুক। ওকে আমি যতটুকু দেখেছি তা থেকে বলতে পারি, পূজারা অসাধারণ ক্রিকেটার।
ওঝার হুঙ্কার।
আমার ভাল বন্ধু ওঝা সম্পর্কেও বলতে পারি, ও দারুণ ক্রিকেটার। ওর বেড়ে ওঠা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। ওঝা নিজের অক্লান্ত খাটনি আর নাছোড় মনোভাবের সুফল পাচ্ছে দেখে আমার দারুণ লাগছে। ও যেটুকু সুযোগ পেয়েছে তাতে ভাল খেললেও ওয়ান ডে ক্রিকেটে ওঝা টানা সুযোগ পায়নি। কিন্তু কখনওই ভেঙে পড়েনি।
গত এক বছরে ঘরের মাঠে অশ্বিনের সাফল্যের একটা কারণ হল, অন্য দিক থেকে ওঝা ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ তৈরি করে এসেছে। তাই আমদাবাদে ওঝা নিজে সফল হয়েছে দেখে আমার বাড়তি আনন্দ হচ্ছে। ও ন’টা উইকেট পেয়েছে বলেই শুধু বলছি না। ওঝা যে ভাবে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানিয়ে দিয়েছিল, সেটারও প্রশংসা করছি। একই ম্যাচে দু’বার কেভিন পিটারসেনের মতো সফল ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরানো আর দ্বিতীয় ইনিংসে ক্রিজে জমে যাওয়া কুককে আউট করা দুটো থেকেই বোঝা যায় ওঝার প্রতিভা আর মনোভাব কোন জায়গায় রয়েছে।আমদাবাদের পারফরম্যান্স ওঝার মনোবল বাড়িয়ে দেবে। অশ্বিন-ওঝা দু’জনেই উইকেট পাওয়ার জন্য বল করছে ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এটা সুখবর ছাড়া কী!

ছবি: উৎপল সরকার




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.