|
|
|
|
লোকপালে কমিটিও চায় প্রধানমন্ত্রীকে, মানবে কি সরকার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে লোকপাল বিলের আওতায় এনেই দুর্নীতির প্রশ্নে বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করার কৌশল নিতে পারে কংগ্রেস। তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করতে পারে, বিজেপি বা অণ্ণা হজারেরা নন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসই সব থেকে এগিয়ে।
রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটি আজ বিলটির পর্যালোচনা শেষ করে সংসদে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ফলে এ বারের শীত অধিবেশনেই বিলটি ফের সংসদে নিয়ে আসা হতে পারে বলে আশা করছেন রাজনৈতিক নেতারা। শীতেই বিলটি ফের সংসদে আনা হতে পারে বলে চলতি মাসের গোড়ায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করে এলেও রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটি যে ভাবে তাদের রিপোর্টে কার্যত বিরোধীদের দাবি মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের আওতায় রাখার সুপারিশ করেছে, তাতেই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। প্রধানমন্ত্রীকে ছাড় দেওয়া হয়েছে শুধু বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা, পরমাণু ও বিদেশ নীতির মতো ক্ষেত্রগুলিতে। কারণ, একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন জেরবার। দলের নেতারাও মানছেন, সরকারের একটি দুর্নীতিগ্রস্ত ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে গোটা দেশে। টুজি, কয়লা খনি বণ্টন নিয়ে আঙুল তোলা হচ্ছে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের দিকেও। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের আওতায় এনে কংগ্রেস সরকার ও প্রশাসনের ভাবমূর্তিকে ফের স্বচ্ছ করে তোলার কৌশল নিতে পারে। বিজেপি প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে লোকপালের আওতায় রাখার দাবিতে সরব ছিল। তারা এই সুপারিশকে স্বাগত জানালেও শেষ পর্যন্ত সরকার আদৌও ওই রিপোর্ট মানবে কি না, সংশয়ে রয়েছে। কারণ, কংগ্রেস নেতৃত্ব এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। দলের নেতাদের একটা অংশ সুপারিশ মেনে নেওয়ার পক্ষে। অন্য অংশের মত, সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ করলেও লোকপাল বিলে প্রধানমন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি মানতে সরকার বাধ্য নয়।
কমিটি বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের দাবি মেনে লোকায়ুক্ত গঠনের ক্ষেত্রেও রাজ্যগুলিকে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। মূলত এই ক্ষেত্রেই রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ তথা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাতের অভিযোগ তুলে তৃণমূল রাজ্যসভায় আটকে দিয়েছিল লোকসভায় পাশ হয়ে যাওয়া বিলটি। কমিটি তার রিপোর্টে বলেছে, রাজ্যে-রাজ্যে লোকায়ুক্ত গঠনের বিষয়টি লোকপাল আইনের আওতার বাইরে রাখা হোক। তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, যদি সরকার এই সুপারিশ না মানে, তা হলে বিলটি নিয়ে বিরোধিতা জারি থাকবে। লোকায়ুক্তের প্রশ্নে কিছুতেই আপস করা হবে না। কমিটির সুপারিশে এ-ও বলা হয়েছে, কেন্দ্রে লোকপাল আইন চালুর এক বছরের মধ্যে সব রাজ্যকে বিধানসভায় আইন পাশ করে নিজস্ব লোকায়ুক্ত গঠন করে ফেলতে হবে। পাশাপাশি ওই কমিটি সিবিআইয়ের হাতে বিচারের ক্ষমতা দেওয়া, এর ডিরেক্টর নিয়োগের দায়িত্ব ক্ষমতাসীন দল বা সরকারের হাতে না রেখে একটি কমিটিকে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। |
|
|
|
|
|