গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তার ছেঁড়া থেকে শুরু করে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগে ত্রুটিসমাধান পেতে একটি ‘টোল-ফ্রি’ নম্বরে ফোন করার পরামর্শ দেয় বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু কালনা ব্লকের সুলতানপুর, বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ‘টোল-ফ্রি’ নম্বরে ফোন করলেও কোনও পরিষেবা মেলে না। কোনও কোনও সময়ে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের পৌঁছতে এক দিনেরও বেশি সময় লেগে যায়।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও গ্রাহক বিদ্যুৎ দফতরের ওই ‘টোল-ফ্রি’ নম্বরটিতে ফোন করে সমস্যার কথা জানান জেলা সদরের গ্রাহক পরিষেরা কেন্দ্রের প্রতিনিধির সঙ্গে। ওই প্রতিনিধি গ্রাহকের বাড়ির ঠিকানা জেনে ওই এলাকার কাছাকাছি কোনও গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে বিষয়টি জানান। সেখান থেকে খবর পেয়ে বিদ্যুৎ দফতরের ভ্রাম্যমাণ একটি গাড়ি পৌঁছে যায় গন্তব্যে। সেই গাড়িতেই মজুত থাকে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও কয়েক জন কর্মী। বাসিন্দারা জানান, বছর দুয়েক আগেও সুলতানপুর, বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন এলাকায় পরিষেবা দেওয়ার জন্য বাঘনাপাড়ায় বিদ্যুৎ দফতরের একটি কার্যালয় ছিল। কিন্তু বর্তমানে ওই কার্যালয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম হয় না। তা হয় ধাত্রীগ্রামের কার্যালয় থেকেই। শুধুমাত্র বিল ও পরিষেবার জন্যই চালু রাখা হয়েছে বাঘনাপাড়ার কার্যালয়টি। |
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত বড় এলাকায় পরিষেবা দেওয়ার জন্য কার্র্যালয়ে রয়েছেন মাত্র তিন জন কর্মী। তাঁদের সঙ্গে নেই ভাম্রমাণ গাড়ি। রয়েছে শুধু সাইকেল। ফলে কার্যালয় থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরত্বে কোনও সমস্যা হলে তাঁদের পৌঁছতে অসুবিধা হয়। ধাত্রীগ্রাম গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঘনাপাড়া, সুলতানপুর ছাড়াও ধাত্রীগ্রাম,সিমলন, আটঘোড়িয়া, বেগপুর, কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েত এলাকায় বিপুল সংখ্যক গ্রাহকদের সমস্যা মেটাতে তাদের ভরসা একটিই ভ্রাম্যমাণ গাড়ি। পরিষেবা দেওয়ার জন্য যে গাড়িতে প্রস্তুত থাকেন কখনও সরকারি আবার কখনও ঠিকাকর্মীরা।
বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্মী দাবি, সিমলন, মধুপুর, ধাত্রীগ্রাম এলাকায় কোনও কাজ পড়লে তা মিটিয়ে ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে বাঘনাপাড়া, সুলতানপুর পঞ্চায়েত এলাকায় যেতে হলে অনেকটা সময় লেগে যায়। এক্ষেত্রে একাধিক গাড়ি ও পর্যাপ্ত কর্মী থাকলে সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব। তিনি দাবি করেন, সমস্যা আরও বেড়ে যায় ছুটির দিনগুলিতে। সেই সময়ে সরকারি কর্মীরা না থাকায় কোনও মতে পরিস্থিতির সামাল দেন ঠিকাকর্মীরা।
সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা রহিম শেখের ক্ষোভ, “কোনও কোনও সময়ে ছোট মেরামতির কাজ হলেও দিনের শেষে এলাকায় পৌঁছতে পারেন না বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা। অবিলম্বে বিদ্যুৎ দফতরের উচিত ওই এলাকার জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করা।” বধূ মধুমিতা মজুমদারের বক্তব্য, “লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের মাশুল। অথচ বাড়ছে না পরিষেবার মান।”
বিদ্যুৎ দফতরের ধাত্রীগ্রাম শাখার স্টেশন ম্যানেজার জ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, “একটা গাড়ি নিয়ে গোটা এলাকায় পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” |