এরা অনাথ। এদের আপন বলতে কেউ নেই। ওদের স্থায়ী ঠিকানা সরকারি হোম। এদের অনেকেই মূক আবার অনেকেই বধির। এ রকমই ৭৮ জন মূক ও বধির আবাসিক কিশোর কিশোরীকে ভাইফোঁটার আনন্দে সামিল করলেন সমাজকল্যাণ দফতরের অধীন রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির হোম কর্তৃপক্ষ। শুধু ভাইফোঁটার আনন্দে সামিল করানোই নয়, প্রতিবন্ধীদের হাতে এদিন নতুন পোশাক ও পটকা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। ঘটনাচক্রে এদিন হোম পরিদর্শনে যান রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতরের উপ অধিকর্তা তড়িৎ সরকার। তিনি বলেন, “মূক ও বধির আবাসিকদের ভাইফোঁটার আনন্দে সামিল করানোয় সূর্যোদয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।” পাশাপাশি, তিনি হোম পরিদর্শন করার পরে জানান, রাজ্য সরকার খুব শীঘ্রই হোমের বিদ্যালয়টিকে চতুর্থ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করতে উদ্যোগী হচ্ছে। পাশাপাশি, হোমের মূক ও বধির আবাসিকদের স্বনির্ভর করতে সরকারি উদ্যোগে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়ারও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ দিন সকালে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ৪০ জন মূক ও বধির কিশোরকে নতুন জামা ও প্যান্ট পরিয়ে বারান্দায় সার দিয়ে বসানো হয়। ৩৮ জন মূক ও বধির কিশোরী হোম কর্তৃপক্ষের দেওয়া নতুন শাড়ি ও চুড়িদার পড়ে একে একে কিশোরদের কপালে দই, কাজল ও চন্দনের ফোঁটা পরায় দেয়। তারা পরস্পরকে মিষ্টি খাইয়ে দেয়। এদিন ওই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে হাজির হন উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মূক ও বধিররা সমাজেরই একটি অংশ। তাদেরকে অবহেলা করলে চলবে না। আমি নিজে মূক ও বধির ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে ফোঁটা নিতে পেরে গর্বিত অনুভব করছি। ভবিষ্যতে ওদেরকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভর করে সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে সরকারের কাছে জেলা পুলিশের তরফে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথী দাস জানান, ওদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ অনেকটাই কার্যকরী হবে! |