অসম-বাংলা সীমান্তে ধুবুরীর ছাগলিয়ায় সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গিদের গুলিতে এক ব্যক্তির জখম হওয়ার ঘটনার জেরে কোচবিহার রাসমেলায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে জেলা পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো রাসমেলা চত্বর তো বটেই, গোটা কোচবিহার শহরকেই বাড়তি নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাসমেলার সময় কেএলও জঙ্গিদের নাশকতার আশঙ্কা এড়াতে স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম গড়ার চিন্তাভাবনাও করছেন জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তাদের একাংশ। কালী পুজোর বিসর্জন পর্ব মেটার পরে ওই ব্যাপারে সমস্ত পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “ছাগলিয়ার ওই ঘটনার পরেই জেলার সীমান্ত এলাকার থানা গুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। জেলা জুড়ে পুলিশি নজরদারি রয়েছে। কালী পুজোর বিসর্জন পর্ব মিটলে রাসমেলার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তরফে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ ফের সংগঠন চাঙ্গা করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। সতর্কতার কথা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন গোয়েন্দারা। কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি এলাকায় অবাধ যাতায়াত ছিল এমন কয়েকজন আত্মসমর্পণকারী কেএলও জঙ্গি দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ বলে পুলিশের ওই আশঙ্কা জোরদার হয়েছে। পুজোর আগে ডুয়ার্সের শামুকতলায় টাইমবোমা উদ্ধারের ঘটনাতেও কেএলও’র হাত থাকার উড়িয়ে দিতে পারেননি পুলিশের কর্তারা। তার ওপর কালী পুজোর রাতে অসমের ধুবুরী জেলার ছাগলিয়ায় হামলা চালায় সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। ওই ঘটনাতেও কেএলও’র যোগসাজস রয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। অসম পুলিশের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ছাগলিয়ার কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে টাকা দাবি করে কেএলও’র নামে ফোন করা হয়। তার পরেই মঙ্গলবার রাতে দুটি পেট্রোল পাম্প ও একটি কাউন্টারে হামলা চালায় সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। মোটরবাইক নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া ওই দুষ্কৃতীরা কেএলও জঙ্গি বলে পুলিশের সন্দেহ। একই ভাবে এবার দুইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়ে নাশকতা ঘটিয়ে কেএলও নিজেদের অস্তিত্ব বোঝানোর মরিয়া চেষ্টা করতে পারে এমন আশঙ্কা পুলিশও উড়িয়ে দিতে পারেনি। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, অসমে যাতায়াতকারী সমস্ত যানবাহনে তল্লাশির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে পুলিশের যৌথ নজরদারির ব্যাপারেও তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ‘স্নিফার ডগ’ এনে রাসমেলা চত্বর তো বটেই কোচবিহার শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানোর বিষয়টিও প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছে। মেলায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর মতো পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। |