উপরে দু’চালার টিনের চাল। আচমকা দেখলে মনে হবে গুদাম ঘর। অসহ্য গরমে ওই ঘরে পড়ে থাকতে হয় রোগীদের। বৃষ্টির সময় ফুটো চাল দিয়ে জল পড়ে। এটাই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল। দেরিতে হলেও পাঁচ দশকের ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে ওই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিধান মিশ্র বলেন, “রোগীদের জন্য অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার সহ সব কিছু নতুন করে তৈরি করা হবে। নতুন ভবন হলে ওই হাসপাতালের দীর্ঘদিনের সমস্যা মিটবে। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে ওই টাকা বরাদ্দ হয়েছে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে গিয়েছে, বরাদ্দ ৬ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকার মধ্যে দু’দফায় হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ হবে। প্রথম দফায় হাসপাতালের ভবন তৈরির কাজ হবে। দ্বিতীয় দফায় তৈরি করা হবে সীমানা পাঁচিল সহ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন। এ ছাড়াও নতুন করে তৈরি হবে অপারেশন থিয়েটার। দ্রুত ওই কাজ শুরু হবে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ৫০ বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুরে ওই হাসপাতাল তৈরি হয়। অন্তর্বিভাগের ছাদ নেই। টিনের ছাউনি। গ্রীষ্মকালে অসহ্য গরমে রোগীদের বিপাকে পড়তে হয়। বর্ষার সময় ফুটো চাল দিয়ে জল পড়ে। অন্তর্বিভাগ জলে ভেসে যায়। বাধ্য হয়ে ওই অবস্থায় রোগীরা পড়ে থাকতে বাধ্য হন। অথচ ৬০ শয্যার ওই হাসপাতালে বছর ভর রোগীর চাপ থাকে। হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়াও লাগোয়া বিহার থেকে প্রচুর রোগী এখানে চিকিৎসার জন্য ভিড় করেন। রোগীর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, শুধু অন্তর্বিভাগ নয়। গোটা হাসপাতাল ভবন সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসনের। নেই বিশ্রামাগার। অথচ হাসপাতাল চত্বরে স্বাস্থ্য দফতরের নিজস্ব জায়গার অভাব নেই। বরাদ্দ অর্থে নতুন করে সেই অংশে ভবন তৈরি হলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে। হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তজমূল হোসেন বলেন, “জেলার কোনও গ্রামীণ হাসপাতাল এতটা বেহাল নয়। বিধানসভায় হাসপাতালের সমস্যার কথা কয়েকবার তুলে ধরেছি। বরাদ্দ মেলায় ভাল লাগছে।” |