খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল
এসএনসিইউ নেই, নিত্য রেফারে হয়রানি
শ্চিম মেদিনীপুরের সব থেকে বড় মহকুমা খড়্গপুর। ফলে মহকুমা হাসপাতালে রোগীদের ভিড় সব সময়ই বেশি। মহকুমার ১০টি ব্লক ছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই নারায়ণগড়, পিংলা, ডেবরা প্রভৃতি ব্লক থেকেও রোগী আসে এই হাসপাতালে। আসেন প্রসূতিরাও। অথচ, এই হাসপাতালেই সদ্যোজাতদের দেখভালের জন্য বিশেষ ইউনিট অর্থাৎ এসএনসিইউ (সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট) নেই। ফলে শ্বাসকষ্ট বা আর একটু জটিল রোগ হলেই শিশুদের ‘রেফার’ করে দিতে হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হয়রান হতে হয় সদ্যোজাতের পরিবারকেও। তাই বারবারই দাবি উঠেছে এসএনসিইউ চালু করার।
সম্প্রতি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। হাসপাতালে এসএনসিইউ থাকার প্রয়োজনীয়তা মেনে নেন সকলেই। সিদ্ধান্ত হয়, দ্রুত বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে দরবার করা হবে। হাসপাতাল সুপার দেবাশিস পাল বলেন, “এসএনসিইউ থাকলে ভাল হত। বিষয়টি নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত ভাবেই আবেদন জানাচ্ছি। এখানে ওই ইউনিট গড়ে উঠলে শিশুদের আর রেফার করতে হবে না। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় যে সব শিশু ভুগবে, তাদের চিকিৎসা এখানেই করা যাবে।”
প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩৫০টি শিশুর জন্ম হয় এই হাসপাতালে। এর মধ্যে ৪০-৫০টি শিশু নানা রোগে ভুগতে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসে সংক্রমণ বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও দেখা দেয়। অনেকসময়ই সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে শিশু মৃত্যুর অভিযোগও ওঠে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে বর্তমানে এসএনএসইউ ইউনিট (সিক নিওনেটাল স্টেবিলাইজেশন ইউনিট) রয়েছে। এখানে কিছু সময়ের জন্য শিশুকে পর্যবেক্ষণে রাখা যেতে পারে, তবে সব সময় নজরে রেখে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। ফলে বারবারই দাবি উঠেছে এসএনসিইউ চালু করার। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “এসএনসিইউ তৈরি হল শিশু মৃত্যুর ঘটনা কমবে। ২৪ ঘন্টাই শিশুদের ‘বিশেষ’ নজরে রাখা যাবে। চেষ্টা করেও অনেক সময় কম ওজনের শিশুকে বাঁচানো যায় না। আমাদের কিছু করবারও থাকে না। এই ইউনিটের পরিকাঠামো গড়ে উঠলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।”
স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতিতে রাজ্য সরকার একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে। ইতিমধ্যে এই টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকদের সঙ্গেও এসএনসিইউ’র বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মৌখিক কথা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। যদিও আলোচনা বেশি দূর এগোয়নি। তবে আধিকারিকেরা আশ্বাস দিয়েছেন, এ সংক্রান্ত প্রস্তাব এলে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। এখন খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ৬টি ওয়ার্মার রয়েছে। তবে কোনও সদ্যোজাত জটিল শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছে দেখলেই তাকে দ্রুত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে রাখার ‘ঝুঁকি’ নেন না চিকিৎসক। হাসপাতালের ওই আধিকারিক বলেন, “এসএনসিইউ চালু হলে আরও অন্তত ১২ জন শিশুকে ‘বিশেষ’ দেখভালে রাখা যাবে। ২৪ ঘন্টা পরিষেবাও পাওয়া যাবে। ফলে সঙ্কটজনক শিশুদেরও অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো যেতে পারে।” হাসপাতাল সুপার বলেন, “আমরা স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত ভাবে এসএনসিইউ চালু করার প্রস্তাব জানাচ্ছি। আশা করি, প্রস্তাব খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
এখন স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন পেয়ে বিষয়টি কবে আকার নেয় সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন মানুষ।

সদ্যোজাতের মৃত্যু, নার্সিংহোমে ভাঙচুর
এক সদ্যোজাতের মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ভাঙচুর চালানো হল আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে। বুধবার রাতের ঘটনা। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানেননি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগের কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা সাহানা বেগম নামে এক মহিলাকে সোমবার ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার তিনি একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। বুধবার বিকেলে শিশুটির মৃত্যু হয়। তারপরই সাহানার পরিবারের লোকজন ওই অভিযোগ তোলেন। তাঁরাই ভাঙচুর চালান বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। ও দিকে, সাহানার পরিবারের পক্ষ থেকে শিশুটির মৃত্যু নিয়ে তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে পুলিশের কাছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শিশুটির দেহ আরামবাগ হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সাহনা বলেন, “বুধবার বিকাল পর্যন্ত মেয়ে সুস্থ ছিল। সন্ধ্যায় শিশু চিকিৎসক কিছু লিখে দিয়ে যান। নার্স এসে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই ও অস্থির আচরণ করতে শুরু করে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ নিথর হয়ে যায়।” সাহানার স্বামী কাজি ইমরান হোসেনের অভিযোগ, “কোনও ভুল ইনঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ। আমরা গোটা ঘটনার তদন্ত চেয়েছি।” অভিযোগ উড়িয়ে নার্সিংহোমের চিকিৎসক নিমাই কুণ্ডু বলেন, “শিশুটি অসুস্থ ছিল। চিকিৎসার গাফিলতি হয়নি। ওই পরিবারের লোকজন নার্সিংহোমের বেশ কিছু জানলা ও টেবিলের কাচ ভাঙচুর করেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.