শ্যালিকাকে বিয়ে করার জন্য ‘চাপ’ দেওয়া হয়েছিল। তাতে রাজি না হওয়ায় বসিরহাটের এক যুবককে মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি এবং শ্যালিকার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি বসিরহাটের গোঠরা-বাগুণ্ডি গ্রামের। পুলিশ জানিয়েছে মৃত যুবকের নাম সইফুদ্দিন মোল্লা (২৬)। তাঁর বাড়ি বসিরহাটেরই পশ্চিম মধ্যমপুরের মাঠনিয়া গ্রামে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিষক্রিয়ায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সঠিক ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরাপলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রতিবেশী সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে গোঠরা-বাগুণ্ডি গ্রামের বাসিন্দা মাজেদ মোল্লার বড় মেয়ে লতিফা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সইফুদ্দিনের। বছর দুয়েক আগে মৃত্যু হয় লতিফার। তারপরেও শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াত ছিল সইফুদ্দিনের। সইফুদ্দিনের বাবা রশিদ মোল্লা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শ্যালিকা উম্মে হাবিবা খাতুনকে বিয়ে করার জন্য ছেলেকে চাপ দিচ্ছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি ছিল না সইফুদ্দিন। বিয়েতে মত ছিল না তাঁদেরও।
রশিদ আরও জানান, গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জরুরি কাজ আছে বলে সইফুদ্দিনকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শ্বশুরবাড়িতে সেই সময় সেই সময় বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়নি সইফুদ্দিন। অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় তাঁর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকের গণ্ডগোল হয়। মারধর করা হয় ওই যুবককে।
রশিদ মোল্লার কথায়, “ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বুঝে তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দেন ওঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তারপর পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে পালিয়ে যায় শ্বশুর, শাশুড়ি এবং শ্যালিকা।”
ওই দিন সন্ধ্যায় মাজেদ মোল্লার বাড়িতে চিৎকার- চেঁচামেচি শুনে ছুটে গিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই সইফুদ্দিনকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। গভীর রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। বৃহস্পতিবার রশিদ মোল্লা ছেলেকে পিটিয়ে মুখে বিষ ঢেলে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তবে মাজেদ মোল্লার আত্মীয়দের বক্তব্য, ওই সন্ধ্যায় কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। বিয়ে করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন সইফুদ্দিন।
প্রতিবেশীরা জানান, তাঁরা বিয়ের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। চিৎকার শুনে গিয়ে দেখেন সইফুদ্দিন অসুস্থ। ছটফট করছে। বাড়িতে কোনও লোক নেই। তাঁরাই সইফুদ্দিনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। |