নিজের এক চিলতে চায়ের দোকানের সামান্য আয়। তাতে সংসারের দাঁড়ই ঠিকমতো টানা যায় না। কিন্তু তাতে কী! সংসারের অভাব সুধাংশুকে তার ভাবনা থেকে টলাতে পারেনি। তাই নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারেও সাধ্যমতো ছোটদের পাশে দাঁড়াতে সব সময় এক পায়ে খাড়া তিনি।
আর তাই কখনও কেউ বইপত্র কিনতে না পারলে তাকে তা কিনে দেওয়া। কাউকে সাহায্য করা। আবার ভাইফোঁটা এলে দুঃস্থদের নিয়ে তার আয়োজন করা। সবই চলে ওই যৎসামান্য আয়ের টাকায়। বৃহস্পতিবার সেই ভাবেই এলাকার গরিব পরিবারগুলির ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিলেন সুধাংশুশেখর পাইক। কাকদ্বীপ বাজার সংলগ্ন মাঠে এ দিন সকাল থেকেই আয়োজনে নেমে পড়েন তিনি। দুঃস্থ পরিবারের কিশোর-কিশোরীরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল এলাকার পথশিশুরা।
|
নিজের এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে অবশ্য একেবারেই কিছু বলতে নারাজ সুধাংশুবাবু। বার বার জানতে চাওয়ায় বলেন, “আমার আয় সামান্য এটা সত্যি। কিন্তু বাচ্চাদের সঙ্গে থাকতে আমার খুব ভাল লাগে। সব সময় ইচ্ছা করে ওদের জন্য কিছু করি। এলাকার যে সব গরিব ছেলে মেয়েরা ইচ্ছা থাকলেও পয়সার অভাবে ভাইফোঁটা করতে পারে না সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এর বেশি কিছু নয়। তবে এ জন্য এলাকার অনেকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন।”
ভাইফোঁটায় এসে বেজায় খুশি সুশান্ত ঘরাই, তমাল দাসেরা। তাদের কথায়, “ আগে ভাইফোঁটা কী জানতাম না।” আর ভাইদের ফোঁটা দিয়ে খুশি রিয়া পাত্র, তমালিকা জানারাও। সুধাংশুবাবুর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ভাইফোঁটা উপলক্ষে ছিল উপহার ও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও।
কাকদ্বীপ এলাকার বেশিরভাগ পরিবারই মৎস্যজীবী। ফলে বছরের বেশিরভাগ সময়েই একা থাকতে হয় বাচ্চাদের। মূলত তাদের পাশে থাকার জন্যই সুধাংশুবাবু তৈরি করেছেন ‘কচিকাঁচা’ নামে একটি সংস্থা। ভবিষ্যতে সাহায্য পেলে দুঃস্থ শিশুদের জন্য আরও অনেক কাজ করতে চান বলে জানালেন সুধাংশুবাবু। |