প্রাতভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দুই তরুণী। হঠাৎ জনাকয়েক দুষ্কৃতী তাঁদের উপর চড়াও হয়ে গলা থেকে সোনার গয়না ছিনিয়ে নেয়। ওই তরুণীরা গ্রামে এসে অভিযুক্তদের চিনিয়ে দিলে গ্রামবাসীরা তাদের আটক করে। কিন্তু পুলিশ আসতে দেরি করায় ফাঁকে দুষ্কৃতীরা জোর করে পালায়। ৯ নভেম্বরের এই ঘটনার পর থেকে দুর্বৃত্তেরা এলাকাছাড়া। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ওই দুই তরুণীর মধ্যে একজন তাঁর বন্ধুর বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন ‘অধরা’ ওই দুষ্কৃতীরা তাঁদের পথ আটকায়। তরুণীর শ্লীলতাহানির পাশাপাশি তাঁর সঙ্গীকেও বেধড়ক পেটায়। এই ঘটনায় নিগৃহীত তরুণী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আক্রান্ত ওই যুবককে প্রথমে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ স্থানান্তরিত করা হয়।
পরপর দু’বার ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে নওদা থানায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও দোষীদের কেউই এখনও ধরা পড়েনি। উপরন্তু গয়না ছিনতাইয়ের পর এক তরুণী ও তাঁর বন্ধুর উপর চড়াও হওয়ার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নিগৃহীত তরুণীর বাবা মনোরঞ্জন চৌধুরী বলেন, “আমার মেয়ের শ্লীলতাহানি করা হয়। মেয়ের বন্ধুকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। ছিনতাইয়ের ঘটনায় কেন ওদের নাম বলা হয়েছে, তা জানতে চায় ওরা। পরে আমরা বিষয়টি লিখিতভাবে পুলিশকে জানিয়েছি।” অপর এক তরুণীর বাবা খোদাবক্স মণ্ডল বলেন, “গয়না ছিনতাইয়ের পর দোষীদের আটকে রাখা হয়। কিন্তু তাড়াতাড়ি পুলিশ এসে দোষীদের ধরল না। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করলে বুধবারের ঘটনা ঘটত না।” নওদার বিধায়ক কংগ্রেসের আবু তাহের খান বলেন, “বিষয়টি নিন্দনীয়। পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে দ্বিতীয় ঘটনাটি এড়ানো যেত।” সিপিএমের নওদা জোনাল কমিটির সম্পাদক শমীক মণ্ডল বলেন, “আক্রান্তেরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে। পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে মেয়েটি ও তাঁর বন্ধুর উপর হামলার ঘটনা এড়ানো যেত।”
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, মদন হালদার, নাসির শেখ ও বাপি হালদারের নামে অভিযোগ হয়েছে। প্রথম দু’জনের বাড়ি নওদার ডাঙাপাড়া গ্রামে। অপরজনের বাড়ি মুক্তারপুরে। নওদা থানার ওসি সম্রাট ফনি বলেন, “পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। অপরাধীদের বাড়িতে পুলিশ বেশ কয়েকবার হামলা চালালেও ধরা যায়নি। তাদের হদিস পেতে তল্লাশি চলছে। আশা করি শীঘ্রই অপরাধীরা ধরা পড়বে।” |