|
|
|
|
আনন্দ উৎসবে সামিল বন্দিরাও |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ওঁদের কেউ খুনের আসামী, আবার কেউ বধূ নির্যাতন বা অন্য কোনও অভিযোগে অভিযুক্ত। জেলের ভিতরে আত্মীয় পরিবার থেকে দূরে বছরের বারোটা মাস কেটে গেলেও কিছু বিশেষ দিনে বাড়ির কথা মনে পড়ে বইকি। বৃহস্পতিবার, ভাইফোঁটার দিনে তমলুক উপ-সংশোধনাগারের এই শতাধিক বন্দিকে আপন করে ভাইফোঁটা দিতে এগিয়ে এলেন শহরেরই বালিকা থেকে গৃহবধূ। |
|
তমলুকের পার্বতীপুরে পার্থপ্রতিম দাসের ছবি। |
এ দিন সকালে কারা দফতরের বিশেষ অনুমতি নিয়ে তমলুক সাব-জেলের ভিতর এই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তমলুকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাব)। সাব-জেলে বন্দি ১১০ জনের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের পরিবারের মহিলারা। ভাইফোঁটা দেন তমলুকের পুরপ্রধান দেবিকা মাইতি, কাউন্সিলর শিখা মাইতি, তৃপ্তি বর্মণ প্রমুখ জনপ্রতিনিধিরাও। সংস্থার তরফে প্রত্যেক বন্দির হাতে মিষ্টি ও ফল তুলে দেওয়া হয়। এ দিন সাতসকালে রীতিমতো স্নান সেরে তৈরি হয়ে বোনেদের অপেক্ষায় ছিলেন বন্দিরা। এক জন বলেন, “জেলের ভিতরে থেকে ভাইফোঁটা পাব ভাবতেই পারিনি। খুব আনন্দ পেয়েছি।” অনুষ্ঠান হাজির সাব-জেলার ভূপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “ভাইফোঁটার মতো অনুষ্ঠানের সামাজিক গুরত্ব অপরিসীম। এই ধরনের অনুষ্ঠানে বন্দিদের মানসিক দূরত্ব দূর হয়।” আয়োজক সংস্থার সম্পাদক কিশোর দাস বলেন, “সকলের উৎসাহ ও আনন্দ দেখে আমরাও খুশি।” বেশ কিছু অন্য ভাইফোঁটার আয়োজনও ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের নানা প্রান্তে। গণ ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল ঘাটালের জ্যোতবাণী গ্রামেও। সেখানে গরিব শিশু-কিশোরদের এক জায়গায় বসিয়ে ফোঁটার পাশাপাশি মিষ্টিমুখ করানো হয়। আয়োজন করা হয়েছিল যম ও যমুনার পুজো। দু’টি সংস্থার পক্ষ থেকে ঘাটাল উপ-সংশোধনাগার ও হাসপাতালেও ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল। ফোঁটা দেওয়া হয় থানার পুলিশ কর্মীদেরও। রাত্রি লাহা, অঞ্জুশ্রী করেরা গিয়ে সকলকে ফোঁটা দেন। তাঁদের কথায়, “অসুস্থ রোগী বা বন্দিদের কে আর ফোঁটা দিতে আসবে। তাই বলে কি তাঁরা আনন্দে বঞ্চিত থাকবেন?” ভাইফোঁটা উপলক্ষে বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করেছিলেন চন্দ্রকোনা বিট হাউস ও ক্ষীরপাই ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীরা। গরিব মানুষদের এদিন শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এদিনই ঘাটালের ওয়ান স্টার ক্লাবের পক্ষ থেকেও বস্ত্র বিতরণ করা হয়। |
|
|
|
|
|