|
|
|
|
পুড়ে মৃত্যু মা-ছেলের, ধৃত শ্বশুরবাড়ির ৫ জন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
গার্হস্থ্য হিংসা রোধে রয়েছে কড়া আইন। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় সেই আইনের রক্ষাকবচ আটকাতে পারে না বধূর অপমৃত্যু। কখনও স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয় নিরীহ বধূকে। কখনও পুড়িয়ে বা ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার মতো নির্মম ঘটনা উঠে আসে সামনে। বুধবার ঘাটাল থানার বাহির সিংহপুরে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এক বধূ ও তাঁর পাঁচ বছরের ছেলের মৃত্যুর পর পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। যদিও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দাবি, ছেলেকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই বধূ।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্তোষী দাস (২৮) নামে ওই বধূর মৃত্যু হয় বাড়িতে। মৃতার ছেলে সৌমেন দাসকে (৫) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ খুনের মামলা শুরু করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয়েছে শ্বশুর-শাশুড়ি-সহ পাঁচ জনকে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান।
ভাইফোঁটার আগের দিন এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে ঘাটাল থানার ফতেপুরের কিশোর দাসের মেয়ে সন্তোষীর সঙ্গে বাহির সিংহপুরের নেপাল দাসের ছেলে কমলের বিয়ে হয়েছিল। কমল সোনার কাজ করেন। কর্মসূত্রে থাকেন হায়দরাবাদে। মৃতার দাদা অমর দাসের অভিযোগ, “বিয়ের এক-দু’বছর পরই শ্বশুরবাড়ির লোকজন অতিরিক্ত আরও এক লক্ষ টাকা পণের দাবি করে। সেই দাবি না-মানায় শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। এই নিয়ে এলাকার মানুষ বৈঠকে বসলে সাময়িক ভাবে অত্যাচার বন্ধ থাকত।” অমরবাবুর কথায়, “সম্প্রতি অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল। এতে কমলের পুরো মদত ছিল। বছরে একবার বাড়িতে এলেও বোন, ভাগ্নের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করত না কমল। তা সত্ত্বেও ভাগ্নের মুখ চেয়ে বোন শ্বশুরবাড়িতে থাকত।” মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে, কালীপুজোর পর টাকা আনার জন্য ফের চাপ দেওয়া হয় সন্তোষীদেবীকে। প্রতিবাদ করায় বুধবার সকাল থেকেই গণ্ডগোল শুরু হয়। দুই জা সন্তোষীদেবীকে মারধরও করে বলে অভিযোগ। অমরবাবুর অভিযোগ, “রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে বোন আর ভাগ্নের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় ওরা।” রাতে ওই বাড়ি থেকে আগুন আর ধোঁয়া বেরোতে দেখে এলাকার মানুষ ছুটে যান। খবর পেয়ে যায় পুলিশও। রাতেই শ্বশুর-শাশুড়ি, দুই জা এবং এক দেওরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে অভিযোগ পেয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ঘাটালের সিআই অসিত সামন্ত। |
|
|
|
|
|